হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলমাছড়ার বিস্তীর্ণ পাহাড়ি অঞ্চলে দেখা দিয়েছে চরম পানি সংকট। ফলে বন্য শূকর, মায়া হরিণ, সজারু ও বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী পানি খুঁজে লোকালয়ের কাছাকাছি চলে আসছে।
তৃষ্ণার্ত প্রাণিদের এমন জীবন-মরণ সংগ্রাম শনিবার (২৬ এপ্রিল) ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। তেলমাছড়া বিট কার্যালয়ের সামনে রাখা কৃত্রিম পানির বেসিনে একদল বন্য শূকর বাচ্চাসহ পানি পান করতে আসে। নিরাপত্তার স্বার্থে দূর থেকে ভিডিও ধারণ করা হয়।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, শাহজানপুর ইউনিয়নের তেলমাছড়া বিটের বনাঞ্চলে এবং সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ঘেঁষা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণির বসবাস। তবে গ্রীষ্মকালে পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় প্রাণিরা পানির তীব্র সংকটে পড়ছে।
বন কর্মকর্তারা জানান, বন্য শূকর সাধারণত আক্রমণাত্মক স্বভাবের হওয়ায় এমন দৃশ্য ধারণে ঝুঁকি থাকে। এদিন আরও দেখা যায়, ঝুঁকি নিয়ে অনেক বন্যপ্রাণি জীবন বাঁচাতে লোকালয়ের ব্যস্ত রাস্তাঘাটের কাছাকাছি চলে আসে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলে বন্যপ্রাণিদের স্বাভাবিক চলাচল ও প্রজনন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে প্রাণিদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।
তেলমাছড়া বিটের কর্মচারী সাদিকুর রহমান বলেন, বন্য শূকরের দলসহ বিভিন্ন প্রাণী প্রতিদিন পানির সন্ধানে এখানে আসে। পানি সংকট নিরসনে আমাদের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মহোদয়ের উদ্যোগে বনের ভেতরে কৃত্রিম পুকুর খননের পরিকল্পনা চলছে।
এ বিষয়ে সিলেট অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শুধু বন্য শূকরই নয়, মায়া হরিণ, বানর, সজারু এমনকি সাপও পানির সন্ধানে কৃত্রিম বেসিনে আসছে। দ্রুত নীরব স্থানে পুকুর খনন করে এ সংকট নিরসনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বন্যপ্রাণি সংরক্ষণবিদরা বলছেন, বন্যপ্রাণিদের নিরাপত্তা এবং প্রতিবেশ রক্ষার স্বার্থে অবিলম্বে বনাঞ্চলে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ