জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘মুজিব পরিবার দেশে জমিদারতন্ত্র কায়েম করেছিল। গণ অভ্যুত্থানে আমরা সেই জমিদারি প্রথা ভেঙেছি। কিন্তু গণ অভ্যুত্থানের পর দেশে আবার সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। আমরা প্রত্যেক উপজেলাকে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’ এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা চান।
গতকাল দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় এনসিপির অফিস উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে নাহিদ আরও বলেন, গণ অভ্যুত্থানের পর আমাদের প্রত্যাশা দেশটাকে নতুন করে গড়ব। বৈষম্যহীন ইনসাফের ভিত্তিতে সম্প্রীতির ভিত্তিতে দেশটাকে আমরা গড়ে তুলব। চাঁদাবাজি সন্ত্রাসমুক্ত একটা দেশ হবে। কিন্তু গণ অভ্যুত্থানের পর, ফ্যাসিস্ট হটানোর পর দেশে আবার সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। যুব সমাজকে আবার অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা কি এজন্য স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছিলাম। আমরা প্রত্যেক উপজেলাকে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। নাহিদ উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন- আপনারা যারা মুরুব্বি আছেন, মা-বোনেরা আছেন, আমাদের সহযোগিতা করবেন। আমাদের সনাতন ধর্মের ভাইবোনেরা অনেক নির্যাতিত হয়েছেন। তাদের জমি দখল করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ বারবার বলেছে তারা অসাম্প্রদায়িক কিন্তু আসলে তা নয়। তারা কখনো সনাতন ধর্মের মানুষের ওপর ইনসাফ করেনি। আমরা সম্প্রীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে সব সুবিধা পাব। এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, হাসিনা নিজে নেতা-কর্মীদের ফেলে পালিয়ে গেছে ভারতে। যারা লুটপাট করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে তারা আজ নেই। এভাবে নেতা-কর্মীদের ফেলে পালিয়ে গিয়ে তারা ঠিক করেনি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে বলেন, ব্যাক ডোর দিয়ে যারা ক্ষমতায় যাবে, পরের দিন তারা আপনাদের বাড়ির টিন খুলে নিয়ে যাবে। আজকে যারা ১০০ টাকা দিয়ে চাঁদাবাজি করছে কালকে এরা মামলা বাণিজ্য শুরু করবে। যারা সিন্ডিকেট করছে তাদের আপনারা চেনেন। আমাদের দেশের ভোটাররা ৩০০ টাকা দিয়ে ভোট বিক্রি করে। মনে রাখবেন আজকে যারা ভোট বিক্রি করবেন কালকে ওরা আপনাদের ওপর নির্যাতন শুরু করবে। সারজিস আলম বলেন, আমার উপজেলায়ও চাঁদাবাজি চলছে।
যে ১০০ টাকার জন্য হাত পাতে, এরকম ছ্যাঁচড়া, চাঁদাবাজ, লুটপাট যারা করে তাদের দিয়ে আগামীর বাংলাদেশে উন্নতি হওয়া সম্ভব নয়। এনসিপির কেউ যদি আপনাদের কাছে চাঁদা চায় মনে করবেন এ লোকটি আমার লোক নয়।
এদিকে ঠাকুরগাঁও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড গোলচত্বরে জুলাই পদযাত্রার শুরুতে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্টে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল। নতুন দেশ গঠনে সারা দেশে কর্মসূচি চলছে। জুলাই ঘোষণাপত্র, সংস্কার, বিচার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে আমরা নির্বাচন চেয়েছি।
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, জুলাই গণ অভ্যুত্থানে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন আমরা তাদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। নির্বাচনের আগে আমাদের কিছু শর্ত রয়েছে। বিচার ও সংস্কারের মধ্য দিয়ে নির্বাচন আমাদের মূল লক্ষ্য।