চট্টগ্রাম নগরের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক মুরাদপুর-অক্সিজেন। এই পাঁচ কিলোমিটার সড়কের পাশে অন্তত পাঁচ জায়গায় ময়লা-আবর্জনার পচা দুর্গন্ধের কারণে যাত্রী-পথচারীদের নাক চেপে ধরে চলতে হয়। কেবল এ সড়ক নয়, চট্টগ্রাম নগরের অনেক জংশন, মোড় ও ফুটপাত দিয়ে চলার সময় দুর্গন্ধের কারণে নাক চেপে ধরে চলতে হয়।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোডের ফুটপাতেই আছে বর্জ্যরে দুটি কনটেইনার। প্রায় সময় কনটেইনারের বাইরে ফুটপাতজুড়েই পড়ে থাকে বর্জ্য। ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ। অনেক সময় কনটেইনার অপূর্ণ থাকলেও বর্জ্য বাইরে ফেলা হয়। কালামিয়া বাজার মোড়েই বাইপাসের নিচের আছে পাঁচটি ডাস্টবিনের বক্স। প্রতিনিয়তই এগুলো বর্জ্যে পূর্ণ থাকে। বক্সের আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে বর্জ্য। এগুলো কুকুর আরও ছড়িয়ে দেয়। এ সময় দুর্গন্ধে পুরো পরিবেশটাই ভারী হয়ে যায়। কালামিয়া বাজারের অনতিদূরে ইসহাকের পুলের পাশেই আছে বর্জ্যরে ভাগাড়। এখানেও নিয়মিত পড়ে থাকে বর্জ্য। গন্ধে চলা দায় হয়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, যত্রতত্র উচ্ছিষ্ট খাবার, পলিথিন, কাগজ, প্লাস্টিকের বোতল, ক্লিনিক্যাল বর্জ্য ফেলা হয়। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব আবর্জনা গড়িয়ে পড়ে মূল সড়কে, ছড়িয়ে পড়ে তীব্র দুর্গন্ধ।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদুল আলম বলেন, চসিক নগরের বর্জ্য যথাসময়ে অপসারণের কথা। কিন্তু সংস্থাটি যথাসময়ে বর্জ্যগুলো অপসারণ না করার ফলে ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাই বর্জ্যরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় সঠিকভাবে কঠোর নজরদারিতে রাখতে হবে। এখানে নাগরিকদেরও দায়িত্ব আছে।
চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি আগের চেয়ে অনেক উন্নত করা হয়েছে। বর্জ্য অপসারণে ট্রাক বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরও যন্ত্রপাতি যোগ হবে। তবে সবাইকে বর্জ্য ফেলা নিয়ে সচেতন-সতর্ক হতে হবে। যার যেখানে যেমন ইচ্ছা ময়লা ফেললে তাতে শহরটি কখনো সভ্য শহর হয়ে উঠবে না।
জানা যায়, প্রায় ৭০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এই নগরে দৈনিক গৃহস্থালির বর্জ্য উৎপাদিত হয় প্রায় ৩ হাজার টন। চসিকের উদ্যোগে দৈনিক প্রায় ২৫০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। বাকিগুলো নালা-নর্দমা হয়ে নগরীর খালে পড়ে। চসিক বর্জ্য অপসারণের কাজে যুক্ত আছেন মোট ৩ হাজার ৫৫৮ জন শ্রমিক। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বর্জ্য বাসা এবং ডাস্টবিন থেকে ভ্যান গাড়িতে করে সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে ফেলে। এরপর সেখান থেকে বড় ট্রাকে করে আবর্জনাগুলো হালিশহর আনন্দবাজার ও বায়েজিদ আরেফিন নগরের বর্জ্যাগারে ফেলা হয়।