পৃথিবী থেকে মহাকাশে পাঠানো নানা বার্তা (রেডিও সিগন্যাল) ভিনগ্রহী সভ্যতার কাছে পৌঁছে যেতে পারে। আর এভাবে ভিনগ্রহীরা আমাদের মহাকাশ যোগাযোগ শুনতে পারে। নাসার সমর্থনে পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই তথ্য বলা হয়েছে।
গবেষণাটি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির গবেষকেরা। তারা জানিয়েছেন, যখন মানুষ মঙ্গল রোভার বা মহাকাশযানে বার্তা পাঠায়, তখন সেই রেডিও সিগন্যালের সবটুকু লক্ষ্যবস্তুতে শোষিত হয় না। কিছু অংশ মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেক দূর পর্যন্ত ছুটে চলে যায়।
গবেষক পিনচেন ফ্যান বলেন, মঙ্গলগ্রহ আমাদের পাঠানো সিগন্যাল পুরোপুরি আটকাতে পারে না। তাই কোনো দূরবর্তী গ্রহ বা মহাকাশযান যদি এই পথে থাকে, তবে তারা এই সিগন্যাল ধরা পড়তে পারে। বিশেষ করে যখন পৃথিবী ও অন্য কোনো গ্রহ এক সরলরেখায় আসে, তখন ভিনগ্রহীরা সহজে তা শনাক্ত করতে পারে।
এজন্য গবেষকেরা মনে করছেন, ভিনগ্রহী জীবনের খোঁজে আমাদেরও বাইরের গ্রহগুলোর এই ধরনের অবস্থান (অ্যালাইনমেন্ট) লক্ষ্য করা উচিত। গবেষণাটি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স-এ প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পৃথিবী থেকে পাঠানো সিগন্যাল শক্তিশালী এবং মহাকাশে দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম। ফলে যদি অন্য কোনো উন্নত জীব এ পথে থাকে, তবে তারা আমাদের মতো যোগাযোগ ধরতে পারে। একইভাবে আমরা চাইলে ভিনগ্রহীদের সিগন্যালও শনাক্ত করতে পারি।
ফ্যান জানান, গত ২০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে—যদি কোনো ভিনগ্রহী সভ্যতা পৃথিবী ও মঙ্গল এক সরলরেখায় থাকার সময় পর্যবেক্ষণ করে, তবে তাদের ৭৭ শতাংশ সম্ভাবনা আছে আমাদের পাঠানো সিগন্যাল ধরার। অন্য কোনো গ্রহের সঙ্গে পৃথিবীর সরলরেখা হলে সম্ভাবনা দাঁড়ায় ১২ শতাংশ। তবে এমন অবস্থান না থাকলে সম্ভাবনা খুবই সামান্য। সহজভাবে বলতে গেলে, পৃথিবী থেকে মহাকাশে পাঠানো সিগন্যাল শুধু রোভার বা স্যাটেলাইটেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে। আর সেই সিগন্যাল ভিনগ্রহীদের কাছে পৌঁছে যেতে পারে—যেমন আমরাও চাইলে তাদের পাঠানো সিগন্যাল শুনতে পারি।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল