রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে থাক তিন জন অসুস্থ হয়েছে। এছাড়াও উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধকালে শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, হাতাহাতির সময় ঘড়ি ও ১০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলেছেন প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান।
শিক্ষার্থীদের দাবি, অযৌক্তিক পোষ্য কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মাঈন উদ্দিন বলেন, আমাকে খেতে দেবে না। বাড়িতে ঢুকতে দেবে না। এমন আন্দোলন আমি দেখিনি। কোটা পুনর্বহাল আমার একক কোন সিদ্ধান্ত নয়। সুষ্ঠুভাবে প্রশাসন চালাতে গেলে সকলের সহযোগিতা দরকার। শিক্ষক ও কর্মকর্তারা শাটডাউনের আল্টিমেটাম দিয়েছিল। সামনে রাকসু নির্বাচন। আরও অনেককিছু আছে। সেগুলো কেমনে হতো। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার রাত থেকে শহিদ জোহা চত্বরে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে কাফনের কাপড়ে আমরণ অনশনে বসেন সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আশাদুল ইসলাম। তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অনশনে যোগ দেন সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারসহ অন্য শিক্ষার্থীরাও। শনিবার সকালে তাদের অনশন ভাঙাতে উপাচার্য, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টারা চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। দুপুরের পর তিনজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় উত্তেজিত হন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় উপ-উপাচার্য ড. মাঈন উদ্দিন প্রশাসন ভবন থেকে বের হয়ে বাসভবনে ফেরার পথে আন্দোলনকারী তার গাড়ি আটকে দেন এবং পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি জানান। এক পর্যায়ে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে বাড়িতে যেতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাস ভবনের গেটে তালা দেন। বাধ্য হয়ে তিনি জুবেরী ভবনে আশ্রয়ের চেষ্টা করলে সেখানেও বাধা দেন তারা। এ সময় উপ-উপাচার্য-শিক্ষক-প্রক্টরের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের হাতাহাতি হয়। ভবনের দু’তলার একটি কক্ষে উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে বাহিরে আন্দোলন করতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, হাতাহাতির সময় ঘড়ি ও ১০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলেছেন প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, উপ-উপাচার্যকে বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়ার এক পর্যায়ে ঠেলাঠেলি হয়েছে। তারা বারবার যখন স্যারকে বাধা দিচ্ছিল তখন আমিও তাদের ঠেরে সরে দিচ্ছিলাম। তারাও ধাক্কা দিচ্ছে। এ সময় দেখি আমার হাতের ঘড়ি নেই। পকেটে ১০ হাজার টাকা ছিল সেটাও নেই। আন্দোলন করবে করুক, কিন্তু ছিনতাই হবে কেন? তাহলে এতদিন কী শিক্ষার্থী তৈরি করলাম মন্তব্য করে আক্ষেপ করেন তিনি।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, শিক্ষকরাই তাদের উপর আক্রমণ করেছেন এবং গায়ে হাত তুলেছেন।
এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর সর্বাত্মক কর্মবিরতির আল্টিমেটামের পরদিন শর্তসাপেক্ষে ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে শিবির, ছাত্রদল ও সমন্বয়কসহ শিক্ষার্থীরা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত