সেন্টমার্টিন পরিচিত নারিকেল জিঞ্জিরা নামেও। প্রচুর পরিমাণে নারিকেল গাছের জন্য এ নামে পরিচিত দ্বীপটি। বর্তমানে দ্বীপটিতে প্রায় ১২ হাজার নারিকেল গাছ রয়েছে। ২০ বছর আগে দ্বীপে ২৫-২৬ হাজার নারিকেল গাছ ছিল বলে জানা গেছে। যথাযথ পরিচর্যার অভাব, সাদা মাছির (হোয়াইট ফ্লাই) আক্রমণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে দিনদিন কমছে গাছের সংখ্যা। মিষ্টি হওয়ায় পর্যটকদের কাছে আলাদা গুরুত্ব রয়েছে সেন্টমার্টিনের ডাব ও নারিকেলের। স্থানীয়রা বলছেন, বিভিন্ন সময় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অনিয়ন্ত্রিতভাবে গড়ে তোলা কটেজ, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও দালানের কারণে গাছ কমছে। এ ছাড়া স্থানীয়রা অধিকাংশ জায়গা বিক্রি করাসহ নারিকেল গাছের সঠিক পরিচর্যা না থাকায় গাছের সংখ্যা কমে গেছে ও ডাব ধরছে না। স্থানীয়দের দাবি, ২০ বছরে অর্ধেকে নেমেছে সেন্টমার্টিনের নারিকেল গাছ। বর্তমানে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৪৩ হেক্টর জমিতে প্রায় ১২ হাজার নারিকেল গাছ রয়েছে। নারিকেল গাছে সাদা মাছির আক্রমণে ফলন কমে গেছে ও ফলের আকৃতি ছোট হয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৩ সালে দ্বীপজুড়ে একসঙ্গে স্প্রে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিস। পরবর্তীতে কীটনাশকের প্রভাবে জনজীবন ও প্রাণীকুলের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিলে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছৈয়দ আলম বলেন, দ্বীপটি নারিকেল জিঞ্জিরা নামে পরিচিত। এক সময় নারিকেল গাছে ভরপুর ছিল এ দ্বীপটি। গাছ ও গাছের পাতায় পোকা ধরার কারণে এখন গাছের সংখ্যা অনেকাংশে কমে গেছে। গাছ থেকে এসব পোকা নিধন করতে যে স্প্রে বা মেডিসিন লাগে তা ক্রয় করার সামর্থ্য অনেকের নেই। এতে নারিকেল গাছের সঠিক পরিচর্যার অভাবে গাছের ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমার বাড়িতে দাদার লাগানো ১৫০টি নারিকেল গাছ ছিল, এখন তা কমে অর্ধেক হয়ে গেছে। অধিকাংশ নারিকেল গাছ ভেঙে গেছে, পোকার কারণে তা নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার নারিকেল গাছ আছে, এগুলো রক্ষার্থে সঠিক পরিচর্যা করার জন্য কৃষি বিভাগসহ সবার এগিয়ে আসা দরকার। দ্বীপের বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, পর্যটন মৌসুমে বিভিন্ন বাড়ির নারিকেল গাছের মালিক থেকে ডাব কিনে পর্যটকদের কাছে বিক্রি করে আয় করতাম, যা দিয়ে সারা বছর চলে যেত। কয়েক বছর ধরে নারিকেল গাছ থেকে নারিকেল ও ডাব আশানুরূপ পাওয়া যাচ্ছে না।