শেরপুরে রাগে অসুস্থ স্ত্রীকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খুশালপুর মধ্যপাড়া এলাকায় ঘটনাটি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভিকটিম খুরশেদা ২০ বছর ধরে অসুস্থ হয়ে বিছানায়। প্রস্রাব পায়খানা করেন বিছানাতেই। এসব পরিষ্কার করতে হয় স্বামী খলিলুর রহমানকে। এক ছেলে আছে থাকেন সৌদিতে। পুত্রবধূ বাবার বাড়ি থাকেন। তিন মেয়ে আছে। একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ঢাকায় ভিক্ষা করেন। আরেক মেয়ে তালাক প্রাপ্ত হয়ে ভাইয়ের সহযোগিতায় সৌদিতে চলে গেছেন। তার ১৬ বছরের ছেলে নানা-নানির সঙ্গে থাকে। বৃদ্ধার খবর নেওয়ার কেউ নেই। অভাব অনটন ও স্ত্রীর অসুস্থতায় স্বামী অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। অসুস্থ স্ত্রীর সেবা-শুশ্রƒষা, রান্নাবান্না সবকিছু বৃদ্ধকেই করতে হয়। সৌদিতে থাকা মেয়ে সামান্য কিছু টাকা দেয় এবং মানুষের সহযোগিতায় কোনো রকম সংসার চলে। গতকাল সকাল ১১টার দিকে স্বামী রাগে কষ্টে ভয় দেখানোর জন্য ঘরের বাইরে দরজার সামনে গর্ত খুঁড়েন। পরে বৃদ্ধাকে ঘর থেকে টেনে এনে ওই গর্তে মাটিচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ঘটনার সময় স্ত্রী চিৎকার শুরু করলে তাকে চড় থাপ্পড় দিতে দেখা যায়। আশপাশে স্বজনরা বিষয়টি লক্ষ্য করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। তবে বৃদ্ধার মেয়ের ঘরের নাতি এই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়। মুহূর্তেই এমন অমানবিক কাণ্ড ভাইরাল হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে, প্রতিবেশীরা বলেছে ঘর থেকে বের করার আগে বৃদ্ধা পায়খানা প্রস্রাব করে চিৎকার শুরু করলে স্বামী রাগে দুঃখে ঘর থেকে টেনে বের করে এনে ওই গর্তে জীবন্ত মাটিচাপা দেওয়ার ভয় দেখিয়েছেন।
শ্রীবরদী থানার ওসি কাইউম খান বলেন, এমন দৃশ্য নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্বামী খলিল পালিয়েছে। কেউ অভিযোগ করেনি। বিষয়টি পুলিশ গভীর ভাবে দেখছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহাম্মেদ বলেন, বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। এই অসহায় দম্পতিকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর চেষ্টা চলছে।