গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে, আওয়ামী লীগের নতুন করে অপতৎপরতা শুরু হয়েছে। জুলাই-আগস্টে একটি শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনে এত মানুষকে হত্যা করল, আহত করল, এত মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল, ১৬ বছরে বাংলাদেশকে একটা নরকে পরিণত করল, অথচ তার জন্য আওয়ামী লীগের ন্যূনতম কোনো অনুশোচনা নেই। গণঅধিকার পরিষদ বরিশাল জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে গতকাল দুপুরে বরিশাল প্রেস ক্লাবে আয়োজিত কর্মিসভার শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। নুর আরও বলেন, আওয়ামী লীগের প্রধান এবং পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে দিল্লি থেকে নানান ধরনের উসকানিমূলক ষড়যন্ত্র বক্তব্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং তার নেতা-কর্মীদেরকে উত্তেজিত করে রাস্তায় নামিয়ে একটা নৈরাজ্য তৈরির অপচেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছে। শেখ হাসিনা যেহেতু ভারতে অবস্থিত, কাজেই শেখ হাসিনার অপতৎপরতার দায় দিল্লি এড়াতে পারে না। ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসকে সরকারের পক্ষ থেকে তলব করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, শেখ হাসিনার অপতৎপরতা বন্ধে ভারত যেন পদক্ষেপ নেয়। আমরা আমাদের চ্যানেলেও বারবার এটা বলেছি। ভারত যদি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়, তাহলে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা এবং গণহত্যার দোসর আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী যারা ওখানে পালিয়ে গেছে তাদের আগে ফেরত দিতে হবে। ডাকসুর সাবেক এই ভিপি আরও বলেন, গণ অভ্যুত্থানের পরবর্তীতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে, সেখানে নানা কারণে কিছুটা বিভক্তি এবং বিভাজন দেখা দিচ্ছে এটা সত্য।
এ গণ অভ্যুত্থান রাতারাতি হয়নি, এর জন্য বিরোধী দলগুলো ১৬টি বছর ধরে সংগ্রাম করেছে। হয়তো জুলাই ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটা সফল গণ অভ্যুত্থান হয়েছে। এই আন্দোলনের কারণে ছাত্র-তরুণদের প্রতি মানুষের একটা অন্যরকমের আশা ভরসা প্রত্যাশা হয়েছে। সেই আন্দোলনের নেতা হিসেবে অনেকেই খুবই পরিচিত। তাদের একটা কথা মানুষ খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে।
সেই জায়গা থেকে আমরা গত কয়েক দিন ধরে বিশেষ করে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির সংশ্লিষ্ট ছাত্র-নেতাদের যে বক্তব্য শুনলাম, সেটা দেশের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে। সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসন সর্বত্র একটা অস্থিরতা আমি লক্ষ্য করেছি গত কয়েক দিন ধরে। ‘এই মুহূর্তে আমাদের রাষ্ট্র সংস্কার এবং একটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন তথা বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের একটা জাতীয় ঐক্য, সংহতির প্রয়োজন’, বলেও মন্তব্য করেন নুর।