বর্ষাকালে ঠান্ডা, কাশি, ভাইরাল জ্বর, হজমের সমস্যা এসব যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সময়ে ঘরেই থাকা একটি সাধারণ মসলা গোলমরিচ হতে পারে শরীরকে সুস্থ রাখার এক প্রাকৃতিক সমাধান।
‘মসলার রাজা’ খ্যাত গোলমরিচে রয়েছে এমন কিছু ঔষধিগুণ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজমশক্তি উন্নত করতে এবং ঠান্ডা-কাশির উপশমে অত্যন্ত কার্যকর।
কী আছে গোলমরিচে?
গোলমরিচে থাকা প্রধান সক্রিয় উপাদান পাইপেরিন শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এটি শুধু ঝাঁজালো স্বাদই আনে না, বরং এর রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য, যা রোগ প্রতিরোধে কাজ করে।
গোলমরিচ খাওয়ার উপকারিতা:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: গোলমরিচে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এতে ঠান্ডা-কাশির প্রকোপ কমে।
ঠান্ডা-কাশি উপশমে কার্যকর: গোলমরিচ শ্বাসতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, কফ পাতলা করে এবং গলার জ্বালা কমায়। তুলসি ও আদার সঙ্গে ক্বাথ করে খেলে দ্রুত আরাম মেলে।
হজমশক্তি বাড়ায়: বর্ষাকালে বদহজম, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকেই অনুভব করেন। গোলমরিচ হজম এনজাইম সক্রিয় করে এবং পাকস্থলীতে অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে খাবার হজমে সহায়তা করে।
শরীরকে ডিটক্স করে: গোলমরিচ শরীরের ফ্রি র্যাডিকেল দূর করে, কোষ রক্ষা করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়, ফলে শরীর থাকে সতেজ।
অন্যান্য পুষ্টির শোষণ বাড়ায়: পাইপেরিন অন্যান্য উপকারী উপাদান, যেমন: হলুদের কারকিউমিন শোষণের হার বাড়ায়, ফলে শরীর আরও ভালোভাবে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে।
কীভাবে খাবেন গোলমরিচ?
চা বা ক্বাথে:
আদা, তুলসি, মধু ও গোলমরিচ দিয়ে বানানো ক্বাথ বা হারবাল চা ঠান্ডা-কাশির বিরুদ্ধে কাজ করে।
ডাল ও সবজিতে:
ডাল বা সবজির রান্নায় এক চিমটি গোলমরিচ মিশিয়ে নিলে স্বাদ যেমন বাড়ে, তেমনি বাড়ে উপকারিতাও।
গরম দুধে:
রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধে হলুদ ও গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা-কাশি কমে এবং ঘুম ভালো হয়।
মধুর সঙ্গে:
এক চা চামচ মধুর সঙ্গে সামান্য গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে গলা ব্যথা ও কাশি থেকে দ্রুত মুক্তি মেলে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা