বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমি সবার প্রতি সম্মান রেখে বলছি, এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কয়েকটি সংস্কার কমিশন সংস্কারের কাজ করছে। কিন্তু সংস্কার কমিশন তো দেশের আপামর মানুষের মনের ভাষা বুঝবে না। দেশের মানুষের মনের ভাষা বুঝবে রাজনৈতিক দলের মানুষেরাই। তাই রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংস্কার না হলে কোনো লাভ হবে না। ঢাকা শহরে ১০ জন মানুষ বসে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারেন না। সুতারাং দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করার কোনো বিকল্প নেই।
রবিবার বিকালে নগরের এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত বিএনপির প্রয়াত কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর ও নগর মহিলা দলের সভানেত্রী মনোয়ারা বেগম মনি প্রমুখ।
আমীর খসরু বলেন, অতীতে শেখ হাসিনা তো দিনের ভোট রাতে কিংবা ডামি নির্বাচন করেছেন। কিন্তু এখন অনেকেই বলছেন ইলেকশনই দরকার নেই, নির্বাচনেই আসতে চায় না। তাহলে এখন তো হাসিনার চেয়ে বড় একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। জনগণ এটা মানবে না। মানুষ এখন নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মানুষের মনোজগতে বিরাট একটা পরিবর্তন হয়েছে। সেটা ধারণ করতে না পারলে কোনো দল রাজনীতি করতে পারবে না। আমরাও ধারণ করতে না পারলে সামনে পথ চলা কঠিন হবে। অনেকেই জিয়াউর রহমানের ছবি পদদলিত করেছে। এটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। এখন আমাদের সহনশীল রাজনীতি চর্চা করতে হবে। কারও বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করলেও সম্মান দেখাতে হবে। রাজনীতিতে সহনশীলতার বিকল্প নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সম্প্রতি বিএনপির বিরুদ্ধে অনেক কিছুই হচ্ছে। আপনারা দেখতেছেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান কোনো কিছুর প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন না। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনীতি হবে সহনশীল। তাদের দেশের জনগণই জবাব দেবে। রাজনীতি শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়া না। জনগণের সমস্যা বুঝা, সেটি সমাধানে নেতৃত্ব দেওয়া।
তিনি বলেন, বিএনপির লন্ডন মিশন ছিল একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন। ওই বৈঠকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ঐকমত্য হয়। সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার সুযোগ নেই। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আমরা সুন্দর একটা দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে রাজনীতি করছি।
আবদুল্লাহ আল নোমানের অবদান স্মরণ করে আমীর খসরু বলেন, চট্টগ্রাম থেকে নোমান ভাইয়ের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সুসময়ে-দুঃসময়ে কর্মীদের পাশে থেকেছেন। ভয়কে উপেক্ষা করে আন্দোলনের মাঠে ছিলেন। সবশেষ দুঃসাহসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠিন সময়েও আন্দোলন করেছেন। নোমান ভাইদের মতো কর্মীবান্ধব নেতা বর্তমানে কমে গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই