বরিশালের গৌরনদীতে ব্যক্তি মালিকানাধীন ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার দিনগত রাতে গৌরনদী মডেল থানায় মামলাটি করা হয়। এর আগে ওই দিন সন্ধ্যায় উপজেলার বাটাজোর মদিনা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অস্ত্রোপচারের পর প্রসূতি সাথি আক্তার পরীর (২২) মৃত্যু হয়। তিনি উজিরপুর উপজেলার ভরসাকাঠি গ্রামের বাসিন্দা ইমন আকনের স্ত্রী।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী ইমন আকন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় চারজন নামধারী ও অজ্ঞাত আরও আটজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- প্রসূতির অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক সমিরন হালদার, ডা. রাজিব কর্মকার আকাশ, ক্লিনিকের পরিচালক মো. ডালিম ও সাব্বির।
মৃত প্রসূতির শ্বশুর নজরুল আকন জানান, শনিবার সকাল ১১টার দিকে তার পুত্রবধূর প্রসব বেদনা শুরু হলে বাটাজোর মদিনা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। প্রথমে ক্লিনিকের চিকিৎসক রাজিব কর্মকার স্বাভাবিক প্রসবের কথা বলে ৫ হাজার টাকার বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা দেন। পরে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় নজরুল আকন আপত্তি জানালে বরিশাল থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক এনে অস্ত্রোপচারের আশ্বাস দেয় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন পরী। অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসক ক্লিনিক ত্যাগ করেন। আধা ঘণ্টা পর পরীকে বেডে দেওয়া হলে তার শরীর সম্পূর্ণ সাদা হয়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা জানায় যে, ক্লিনিকে কোনো অক্সিজেন নেই, বাইরে থেকে আনতে হবে। একজন স্টাফ অক্সিজেন আনতে গিয়ে আর ফিরেননি। গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহতা জারাব সালেহীন বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তাদের আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন নবায়ন না করেই ক্লিনিকটি তাদের কার্যক্রম চালু রেখেছিল।