বাংলাদেশে কয়েক প্রজাতির টিয়া রয়েছে। এর এক প্রজাতি ফুলমাথা টিয়া। এরা আবাসিক প্রজাতি। হীরামন পাখি নামেও পরিচিত। এ পাখিটি দেখতে খুবই সুন্দর। এক সময় বাসাবাড়ি বা আশপাশে প্রচুর দেখা যেত। কিন্তু এখন প্রায় বিরল। দিনে দিনে গাছপালা কমে যাওয়া ও শিকারির কারণে ফুলমাথা টিয়া হারিয়ে যাচ্ছে। এই হীরামন পাখিকে লোককথা, গীতিকাব্য, গান ও রূপকথায় ভালোবাসা, প্রেম ও সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে। সম্প্রতি হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান থেকে এই ফুলমাথা টিয়ার ছবি তুলেছেন শৌখিন ফটোগ্রাফার শাকিল আহমেদ।
ফুলমাথা টিয়া প্রায় ৩৬ সেন্টিমিটার লম্বা। পুরুষ পাখির মাথা গোলাপি। দেহের প্রায় পুরোটাই সবুজ। মাথার চাঁদির সামনের অংশ ও ঘাড় গোলাপি-লাল। ঠোঁটের ওপরটা ফিকে-কমলা, নিচটা বাদামি। চোখ হলদে। থুতনি ও গলায় কালো লাইন। স্ত্রী পাখি ফিকে-ধূসর নীল মাথা। থুতনি ছাড়া পুরু দেহই সবুজ। গলার পেছনে হলদে-সবুজ। ঠোঁট ফ্যাকাসে। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের চিরসবুজ বন ও সুন্দরবনে এদের ছোট থেকে মাঝারি দলে দেখা যায়। এরা শস্যদানা, ফল, কুঁড়ি, ফুলের পাপড়ি ও মধুরেণু খেয়ে জীবনধারণ করে।
জানুয়ারি থেকে এপ্রিল এদের প্রজননের সময়। এ সময় গাছের খোঁড়লে বাসা বাঁধে। চার-পাঁচটি ডিম পাড়ে। স্ত্রী পাখি একাই ডিমে তা দেয়। পুরুষ পাখি থাকে বাসা পাহারায়। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২২-২৪ দিন। ফটোগ্রাফার শাকিল আহম্মেদ বলেন, শিকারিদের কারণে ফুলমাথা টিয়া কমে যাচ্ছে। মানুষ এই টিয়া খাঁচায় বন্দি করে রাখে, তাই শিকারিরাও শিকার করে বিক্রি করছে। এ ছাড়া গাছপালা কমে যাওয়ার কারণেও এরা কমে যাচ্ছে।