শনির উপগ্রহ এনসেলাডাসে প্রাণের উপযোগী পরিবেশ থাকতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন ইঙ্গিত মিলেছে।
নেচার অ্যাস্ট্রোনমি পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, বরফে ঢাকা শনির উপগ্রহের নিচে বিশাল জলাধার বা মহাসাগর থাকতে পারে। সেখানে প্রাণ সৃষ্টির উপযুক্ত উপাদান বিদ্যমান।
জার্মানির স্টুটগার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল নাসার ক্যাসিনি মহাকাশযানের সংগৃহীত পুরনো তথ্য বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পেয়েছেন। তারা এনসেলাডাসের বরফস্তরের ফাটল দিয়ে বেরিয়ে আসা ক্ষুদ্র বরফকণাগুলোর রাসায়নিক গঠন পরীক্ষা করেন। এসব বরফকণায় জটিল জৈব অণু পাওয়া গেছে। এই জৈব অণু পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টির মূল উপাদান হিসেবে কাজ করে।
গবেষক দলের প্রধান নোজায়ার খাওয়াজা বলেন, এই আবিষ্কার প্রমাণ করে এনসেলাডাসে প্রাণের উপযোগী সব শর্তই বিদ্যমান।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যদিও এনসেলাডাসের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩০ ফারেনহাইট। তবুও বরফস্তরের নিচে তরল জলের মহাসাগর রয়েছে। দক্ষিণ মেরুর কাছ থেকে পানি ও বাষ্পের প্লুম নির্গত হওয়ার ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দেয়, সেখানে ভূ-তাপীয় ক্রিয়া সক্রিয় থাকতে পারে—যা জীবনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে।
ক্যাসিনি মহাকাশযান ২০০৮ সালে এনসেলাডাসের বরফীয় ছিটায় সরাসরি উড়ে গিয়ে তাজা বরফকণা সংগ্রহ করেছিল। সেগুলোতে পানি ছাড়াও বিভিন্ন জৈব যৌগ যেমন ইস্টার ও ইথার পাওয়া গেছে, যা পৃথিবীতে জীবনের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গবেষকরা জানান, পূর্বে সংগৃহীত নমুনাগুলো মহাজাগতিক বিকিরণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু এই নতুন বিশ্লেষণে পাওয়া বরফকণাগুলো অনেক তাজা, তাই তথ্যগুলোও বেশি নির্ভরযোগ্য।
বিজ্ঞানীদের মতে, এনসেলাডাসের পাশাপাশি বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ ইউরোপাও প্রাণের সন্ধানে পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হতে পারে। ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানগুলো এই রহস্যময় উপগ্রহগুলোর আরও অজানা তথ্য উন্মোচন করতে পারবে বলে তারা আশা করছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল