বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র টিলাগড় ইকোপার্কের পাশেই সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি)। পার্কে অন্যসব বন্যপ্রাণীর সঙ্গে রয়েছে বানর। বনে খাবার সংকট দেখা দেওয়ায় লোকালয়ে নেমে আসছে বানরের দল। হানা দেয় বাসাবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক হলে। ঘরে ঢুকে নিয়ে যায় খাবার। সম্প্রতি বানরের উৎপাত বেড়েছে সিকৃবিতে। সকাল হলেই দলবেঁধে বানর ঢুকে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশেষ করে ছাত্রীদের হলগুলোতে। ক্ষুধার্ত খ্যাপা বানর অনেক সময় আক্রমণ করে বসে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গেল কয়েক মাসে শতাধিক ছাত্রী বানরের আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে ইকোপার্ক ও আশপাশ এলাকার জঙ্গল থেকে শত শত বানর সিকৃবি ক্যাম্পাসে ঢুকে। ছাত্রীদের ‘দূররে সামাদ রহমান হল’ ও ‘সুহাসিনী দাস হল’ টিলা ও গাছপালা ঘেরা হওয়ায় বানরগুলো ওই এলাকায় সবচেয়ে বেশি বিচরণ করে। বানরের দল সুযোগ পেলেই ঢুকে পড়ে হলের ভিতর। তাড়াতে গেলে আক্রমণ করতে আসে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বন বিভাগের পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল দুটির চারপাশে নেট দিয়ে ঘেরাও দেয়। হলের আশপাশের গাছের ডালপালা ছাঁটাইসহ নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে। কিন্তু এরপরও বানরের উৎপাত নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। ছাত্রীরা জানান, দরজা-জানালা খোলা থাকলে গ্রিলের ফাঁক দিয়ে বানর ভিতরে ঢুকে খাবার নিয়ে যায়। তাড়াতে গেলে খ্যাপে যায়, তেড়ে এসে কামড় দেয়। বাইরে কাপড় শুকাতে দিলে বানর নিয়ে যায়। এমনকি ক্লাসে যাওয়ার পথেও আক্রমণ করে। বানরের উৎপাত বন্ধে ব্যবস্থা নিতে গতকাল ঢাকায় বন ভবনে বন বিভাগের প্রধান বনসংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরী, বন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বনসংরক্ষক মো. সানাউল্লাহ পাটোয়ারী ও বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন সিকৃবির উপাচার্য ড. মো. আলিমুল ইসলাম। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সামিউল আহসান তালুকদার। বৈঠকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়। উপাচার্য বলেন, বণ্যপ্রাণী নিয়ন্ত্রণ আইনের বাধ্যবাধকতা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নানান পদক্ষেপ গ্রহণের পরও বানরের সমস্যা সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। ছাত্রী হলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং বন বিভাগের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বানরের উৎপাতের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে সমস্যাটির সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হবেন।