পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আবদুলপুর জংশন থেকে রাজশাহী রেললাইনে পাথরের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে ইটের খোয়া। সম্প্রতি দরপত্র ও ঠিকাদার নিয়োগ ছাড়াই রেলওয়ে পাকশী বিভাগ নিজ উদ্যোগে ৫০ কিলোমিটার রেললাইনে ইটের খোয়াসহ পাথর দিয়েছে। তবে পাথর ফেলার বিষয়টি পাকশী আগে থেকে জানায়নি বলে জানিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলের সদর দপ্তর। রেলওয়ের দায়িত্বশীলরা বলছেন, রেললাইনে পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া দেওয়ার সুযোগ নেই।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গেল সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজশাহী থেকে আবদুলপুর জংশন রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত রেলওয়ে পাকশী বিভাগ ৫০ কিলোমিটার লাইনের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১ হাজার ৯০ ঘনমিটার বা ৪০ হাজার সিএফটি পাথর ফেলেছে। মাটি লেগে থাকা এসব পাথর বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গেলে পাথরের মাঝে ইটের খোয়া স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ ছাড়া হালকা ও নিম্নমানের পাথর রয়েছে।
গত মঙ্গলবার বিকালে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের নতুন বুধপাড়া থেকে পূর্বদিকে হাজরাপুকুর পর্যন্ত গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, সদ্য দেওয়া এসব পাথরের মধ্যে ময়লা মাটি লেগে ছিল। বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গিয়ে পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া স্পষ্ট হয়েছে। পুরো রেললাইনে এমন চিত্র। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সদর দপ্তর এমনকি প্রধান প্রকৌশলী অফিসকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি পাকশী ডিভিশনাল জোন। এ ছাড়া দরপত্র করে ঠিকাদারের মাধ্যমেও কেনা হয়নি। যমুনা সেতুর আগের রেললাইনে ব্যবহৃত পুরোনো পাথর অবমুক্ত করা হয়েছে। সেই পাথর এনে বিছানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন রেলকর্মী জানান, রেললাইনে শুধু পাথর ফেলা হয়। এর মধ্যে ইট বা ইটের খোয়া দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে রেললাইনে পরিষ্কার ও ভালো মানের পাথর দেওয়া হয়। সম্প্রতি দেওয়া পাথর অপরিষ্কার ছাড়াও রয়েছে ইটের খোয়া।
গেল ৭ সেপ্টেম্বর বিকালে হরিয়ান স্টেশন থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন এলাকার রেললাইনে পাথর ফেলা হয়। এ সময় রেলওয়ের ওয়েম্যানরাও ছিলেন। তাদের দেখানো স্থানগুলোর মধ্যে যেসব অংশে পাথর কম শুধু সেসব অংশে পাথর ফেলা হয়েছে। সেই পাথরের মধ্যে ইটের ছোট লাল খোয়া রয়েছে। সেগুলো দূর থেকেই চোখে পড়ছে। এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজশাহী থেকে কাঁকনহাট স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২ কিলোমিটার রেললাইনে পাথর বিছানোসহ আরও কিছু কাজ করা হয়েছিল। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, পাথরের সঙ্গে অন্য কোনো কিছু মিশ্রণের সুযোগ নেই। যদি কোথাও দায়িত্বে অবহেলা হয়ে থাকে তাহলে খোঁজ নেব।