ফেসবুকে ‘বিকৃত ছবি’ পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সকালে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর (উত্তর) ইউনিয়নে পালিশারা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকে গ্রামে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্যসচিব কাজী জসিম জানান, গন্ধর্ব্যপুর (উত্তর) ইউনিয়ন জামায়াত আমির মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে নিয়ে বিকৃত একটি ছবি শেয়ার করেন। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে এ নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। গতকাল সকালে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ইলিয়াসকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালান জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। এতে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল মিজি, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নেছার আহম্মেদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস, যুবদলের সহসভাপতি কামালসহ প্রায় ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকি পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন জামায়াত আমির ও মীরাবাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাও. ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে একটি ছবি আমার অসাবধানতাবশত শেয়ার হয়েছে। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন জানানোর পর আমি ডিলিট করে দিই। আমার মোবাইলটি ঘরে থাকে, অনেক সময় বাচ্চারা ব্যবহার করে, এতে বাচ্চারাও শেয়ার করতে পারে। ঘটনা যা হয়েছে, আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তারপরও শুক্রবার সকালে বসার কথা ছিল। আমার উদ্দেশ্য ছিল আমি ক্ষমা চাইব। কিন্তু তারা বসার পূর্বেই আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে, এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
গন্ধর্ব্যপুর (উত্তর) ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আবদুল মোতালেব বলেন, আমাদের আহতরা হলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ড পালিশারা গ্রামের জামায়াতের আমির হাফেজ আহমেদ, সেক্রেটারি ফয়সাল, মোহাম্মদুপর ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের আমির আনোয়ার হোসেন, ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আবদুল মোতালেব, জামায়াতের কর্মী শরীফ, সাদ্দাম, মনু, রাশেদ, রাজু। তারা সবাই চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আবদুল কুদ্দুস মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও মারধরের বিষয়টি উপজেলা বিএনপি নেতাদের অবহিত করা হয়েছে। এখন দলীয় যে নির্দেশনা আসবে, আমরা ওই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করব।
উপজেলা জামায়াত আমির ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন পরান বলেন, আমি বিষয়টি নিজে দেখছি। যা হয়েছে, এজন্য ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। তারপরও হামলা করাটা দুঃখজনক।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ রহিম পাটওয়ারী বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ছবিকে বিকৃত করে মাওলানা ইলিয়াস ফেসবুকে পোস্ট করেন। এ বিষয়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ জানালে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন।
হাজীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে। পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।