বাংলাদেশে ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার। ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে প্রথম সাবান কারখানা দিয়ে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ৭টি কারখানায় প্রতিদিন ২০টিরও বেশি ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদন করছে।
শুরুর দিন থেকেই আন্তর্জাতিক মানের নিরাপদ ও কার্যকর পণ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করে আসছে ইউনিলিভার। লাক্স, লাইফবয় ও সানলাইটের মতো ব্র্যান্ডগুলো দেশের ভোক্তা–বাজারে পরিচ্ছন্নতা ও ব্যক্তিগত যত্নে নতুন যুগের সূচনা করে।
স্বাধীনতার পর পুনর্গঠনের সময়ে স্থানীয় উৎপাদন বাড়িয়ে এফএমসিজি খাতে নতুন গতি আনে প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৭৩ সালে লিভার ব্রাদার্স বাংলাদেশ লিমিটেড নামে নিবন্ধনের পর কোম্পানি আধুনিক যন্ত্রপাতি, নিরাপত্তা–কেন্দ্রিক কার্যপ্রবাহ ও দক্ষ জনবল তৈরি করে মান–নিয়ন্ত্রিত উৎপাদন ব্যবস্থায় আরও অগ্রসর হয়।
ইউনিলিভার জানায়, তাদের কোয়ালিটি কাঠামো তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে। মান–নিয়ন্ত্রণ (QC), গুণমান নিশ্চয়তা (QA) এবং ধারাবাহিক উন্নয়ন (CI)। কাঁচামাল থেকে কারখানা, ডিপো, পরিবহন হয়ে ভোক্তার হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে একই মানদণ্ড বজায় রাখা হয়।
কারখানাগুলোতে প্রোডাক্ট কোয়ালিটি স্ট্যান্ডার্ডস (PQS) ও কনজিউমার রিলেভান্ট কোয়ালিটি স্ট্যান্ডার্ডস (CRQS) কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। প্রতি ঘণ্টায় ৬০টি অন–প্যাক এবং ৮টি ইন–প্যাক পরীক্ষা পণ্যের দৃশ্যমান ও কার্যগত মান নিশ্চিত করে। ব্যাচ কোড, সিলের দৃঢ়তা, ওজন–নিয়ন্ত্রণসহ সূক্ষ্ম বিচ্যুতি রিয়েল–টাইম মনিটরিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়। Delivered Superiority Index (DSI)–এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।কারখানা থেকে শেলফ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে পণ্যের মান বজায় আছে কি না।
পণ্য বাজারে যাওয়ার পরও নিয়মিতভাবে দেশের ডিপো ও দোকানগুলোতে SKU পর্যবেক্ষণ করা হয়। ছয়টি বড় শহরে প্রান্তিকভিত্তিক দোকান–নির্ভর মান–পরীক্ষায় আলো, তাপমাত্রা ও হ্যান্ডলিংয়ের প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়।
ভোক্তার অভিজ্ঞতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে DVOC ও DVOC–AI প্ল্যাটফর্ম থেকে রিয়েল–টাইম মতামত সংগ্রহ করা হয়, যা ভবিষ্যৎ পণ্য–উন্নয়নকে আরও ভোক্তা–কেন্দ্রিক করে।
ডিজিটাল কোয়ালিটি টুল, AI–চালিত ভোক্তা–ইনসাইট, পরিবেশবান্ধব প্যাকেজিং ও কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ করে ভবিষ্যতে আরও দ্রুত ও টেকসই কোয়ালিটি–ব্যবস্থা গড়ার পরিকল্পনা করছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ।
সংস্থাটি জানায় কোয়ালিটি তাদের কাছে কেবল একটি প্রক্রিয়া নয়; এটি প্রতিষ্ঠানের পরিচয় ও ভোক্তার প্রতি অঙ্গীকার। ছয় দশকের ধারাবাহিকতাকে সামনে রেখে ইউনিলিভার বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ যাত্রা আরও শক্ত ভিত্তিতে এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা