জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ব্যক্তিগত আয়কর জমা এখন পুরোপুরি অনলাইনে। ঘরে বসে মানুষ অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা দিতে পারছে। এতে করদাতাদের মধ্যে স্বস্তি তৈরি হয়েছে। তবে অনলাইনে জমা দিতে গিয়েও বিড়ম্বনায় পড়েছেন অনেকে। ১ কোটি ৪৫ লাখেরও বেশি টিআইএনধারী রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই কম্পিউটারে টিআইএন দিতে অভ্যস্ত নন। ফোনে রিটার্নের সব ধরনের ফিচার পাওয়া যায় না। নির্ধারিত সময়ে ওটিপি আসে না। গাড়ি এবং সঞ্চয়পত্রের কর সমন্বয় হতে সময় নেয়। এতে গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েন।
এনবিআরের তথ্য অনুসারে, গত ৪ আগস্ট থেকে সারা দেশের সব ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তবে ৬৫ (পঁয়ষট্টি) বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, সনদপত্র দাখিল সাপেক্ষে শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা অথবা মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি ব্যতীত সারা দেশের সব ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে।
এনবিআর জানায়, ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধনসংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে না পারলে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত অথবা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে তিনি পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। এ ছাড়া অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে সমাধানের জন্য রাজস্ব বোর্ডের কর্মীরা কল সেন্টার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করছেন।
গত বছর নির্দিষ্ট এলাকায় ব্যক্তি করদাতা, সারা দেশের সব ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কতিপয় বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হলে ব্যাপক সাড়া পায় এনবিআর। গত বছর ১৭ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেন।
এদিকে অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা দিতে গিয়েও নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন করদাতারা। তারা অভিযোগে জানান, বিভিন্ন সময় সার্ভার জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। সার্ভারে লোড নিতে সময় নেয়। সার্ভার জটিলতায় অনেক সময় সাবমিট করার পরও অপরিশোধিত দেখা যায়। ফোনে কম্পিউটারের মতো সব ফিচার মোবাইলে আসে না। বিআরটিএ কিংবা সঞ্চয়পত্র সমন্বয় হতে সময় নেয়।
রাজস্ব বিশ্লেষক ও রাজস্ব আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ই-রিটার্ন চালু করার আগে এনবিআর তার কর্মকর্তা এবং সাধারণ করদাতাকে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দিতে পারত। করদাতারা আগে থেকে ই-রিটার্ন-এ অভ্যস্ত হতো। একবারে সম্পূর্ণ অনলাইন না করে অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনের সুবিধাও রাখা উচিত ছিল। ১ কোটি ৪৫ লাখের বেশি টিনধারী রয়েছেন। অনেক সময় দেখা যায় সার্ভার ডাউন হয়ে পড়ে। এতে গ্রাহকরা বিড়ম্বনায় পড়েন।