বাতিলকৃত পোষ্য কোটা পুনর্বহালে আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকট হয়েছে। ভোটের আগ মুহূর্তে মীমাংসিত ইস্যু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র, বলছেন রাকসু পদপ্রার্থীরা। কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এ কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আখ্যা দিয়ে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত বৃহস্পতিবার ১০ শর্তে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত হয়। এ ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ফরিদ খান বলেন, অনেক চেষ্টার পরও এ কোটা বাতিল সম্ভব হয়নি। তারাও তো একটি বড় কমিউনিটি। সবমিলিয়ে এটা প্রশাসনের নৈতিক পরাজয়। এ ক্ষেত্রে উদ্ভূত পরিস্থিতি আসন্ন নির্বাচনে (রাকসু) প্রভাব ফেলতেও পারে।
এ ব্যাপারে রাবি শিবির সভাপতি ও ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান বলেন, রাকসু নির্বাচনের আগ মুহূর্তে মীমাংসিত পোষ্য কোটা পুনর্বহাল নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র। নির্বাচন বানচালে একটি মহল সর্বশেষ হাতিয়ার হিসেবে পোষ্য কোটাকে বেছে নিল। আমরা কোনোভাবেই নির্বাচন আটকাতে দেব না। কোটাও বাস্তবায়ন হতে দেব না।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের এজিএস প্রার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা বলেন, গণ অভ্যুত্থানের পর পোষ্য কোটার নৈতিক মানদণ্ড নেই। এটা মীমাংসিত বিষয়। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এমন সিদ্ধান্ত ষড়যন্ত্রমূলক।
সাবেক সমন্বয়ক ও জিএস পদপ্রার্থী সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, রাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে যখন উৎসব চলছে, তখন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন ঘিরে সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। অন্য কোনো আশঙ্কাও দেখছি না। সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে শিবির ও সমন্বয়কসহ অন্যরাও অংশ নেন। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি করা হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, আসন্ন রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নেই পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিক্ষোভে সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, রাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে যখন উৎসব চলছে, তখন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের অগ্রনায়ক হিসেবে প্রশাসনকে এ চেয়ারে বসানো হয়েছিল। আজ তারা বিপ্লবের সঙ্গে গাদ্দারি করেছে। যে কোটার কবর রচিত হয়েছে, সেই কোটা কোনোভাবেই ফিরতে দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, এ বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাতিল করে প্রশাসন। তবে পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আখ্যা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ দাবিতে কয়েক দফা কর্মবিরতিও পালন করেন তারা। গত বুধবার দাবি আদায়ে তারা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটি পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয়। এর প্রতিবাদে রাতেই উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে শিবির, ছাত্রদল ও সমন্বয়কসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।