গ্রিস সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় নতুন এক কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। যারা আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়ে নির্বাসনের তালিকায় আছেন, তাদের পায়ের গোড়ালিতে ইলেকট্রনিক চিপ বসিয়ে পর্যবেক্ষণ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। সম্প্রতি অভিবাসনমন্ত্রী থানোস প্লেভরিস জানিয়েছেন, নির্বাসন আদেশ অমান্য করা হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ জন্য চলতি বছরের মধ্যেই নতুন এ ব্যবস্থা কার্যকর হবে। তিনি রাষ্ট্রীয় বেতার ইআরটি রেডিওকে বলেন, ইলেকট্রনিক পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করবে আশ্রয়প্রার্থীদের সামনে আর কোনো বিকল্প খোলা নেই। মন্ত্রী আরও জানান, আপিল প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলে যাদের দেশ ছাড়তে বলা হবে, তাদের শেষ ৩০ দিনের জন্যই এই নজরদারি চালু থাকবে। তবে যারা স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে যাবেন, তাদের জন্য সরকার ২ হাজার ইউরো পর্যন্ত বোনাস দেওয়ার কথাও ভাবছে। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর আফ্রিকা থেকে সমুদ্রপথে গ্রিসে প্রবেশের চেষ্টা বেড়ে যাওয়ায় দেশটির সরকার আরও কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে লিবিয়ার উপকূল থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ক্রিট দ্বীপে ভিড় করছেন। অথচ ওই দ্বীপের প্রধান অর্থনীতি পর্যটননির্ভর। অভিবাসীদের হঠাৎ আগমনে স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তাদের আশঙ্কা, এতে পর্যটক কমে গেলে অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়বে।
এমন পরিস্থিতিতে রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিসের সরকার তিন মাসের জন্য আশ্রয় অধিকার স্থগিত করেছে। তবে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বিষয়টিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। এর আগে সাত বছর গ্রিসে বসবাস করলেই বৈধতার জন্য আবেদন করা যেত। কিন্তু সরকার সেই আইনও বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বহু বাংলাদেশি অভিবাসী, যারা সাত বছরের অপেক্ষার পর বৈধ হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন, তারা এখন গভীর হতাশায় ভুগছেন।