বরিশালে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে সোহরাব হোসেন আকন (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এ ছাড়া লাশ গুম করায় আরও সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহা. রকিবুল ইসলাম এ দণ্ড দেন। সোহরাব মুলাদী উপজেলার তয়কা গ্রামের লাল মিয়া আকনের ছেলে।
মামলার বরাতে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি মোখলেচুর রহমান বাচ্চু বলেন, মুলাদী উপজেলার তেরচর গ্রামের বাসিন্দা হোসেন পাটোয়ারীর মেয়ে লিমা বেগমের সঙ্গে ফেরদৌস নামে একজনের বিয়ে হয়। স্বামীকে নিয়ে লিমা বাবার বাড়িতে থাকতেন। ওই বাড়িতে সোহরাব আসাযাওয়া করতেন। তিনি ফেরদৌসকে হত্যার হুমকি দিয়ে লিমাকে তালাক দিতে বাধ্য করেন। পরে তাকে সোহরাব বিয়ে করেন। বিয়ের পর দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে লিমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর সোহরাব লিমার বাবার বাড়ি গিয়ে যৌতুকের টাকা দাবি করেন।
টাকা দিতে অস্বীকার করলে লিমাকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। তখন পাশের কক্ষে থাকা ছোট ভাই দেখতে পান বোন অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তখন তাকে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার কথা বলে সোহরাব বের হন। এরপর থেকে লিমাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি সোহরাব ও তার মাকে আসামি করে মুলাদী থানায় হত্যা এবং লাশ গুমের অভিযোগে নিহতের বোন ডলি বেগম মামলা করেন। মুলাদী থানার এসআই মো. জুবায়ের ২০১৪ সালের ১০ মে সোহরাবকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক গতকাল এ রায় দিয়েছেন। বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানান, এর আগে ২০০৯ সালে দ্বিতীয় স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা মিলি বেগমকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়ার মামলায় সোহরাবকে আদালত ফাঁসির রায় দিয়েছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করলে ফাঁসির পরিবর্তে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়।