আজ ২২ শ্রাবণ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম প্রয়াণ দিবস। ১৯৪১ সালের ৬ আগস্ট বাংলা ১৩৪৮ সনের ২২ শ্রাবণ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে শ্রাবণের বাদলঝরা দিনে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন তিনি। নানা আয়োজনে আজ বুধবার কবিগুরুর প্রয়াণ দিবস পালন করবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষেরা। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে কবিগুরুর রয়েছে অবিস্মরণীয় অবদান। তাঁর হাত ধরেই বাংলা সাহিত্য নতুন রূপ লাভ করে। গল্প, উপন্যাস, কবিতায়, প্রবন্ধ, নতুন সুর ও বিচিত্র গানের বাণী, অসাধারণ সব দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ প্রবন্ধ, সমাজ ও রাষ্ট্রনীতিসংলগ্ন গভীর জীবনবাদী চিন্তাজাগানিয়া অজস্র এমনকি চিত্রকলায়ও রবীন্দ্রনাথ চির নবীন। মানুষের মুক্তির দর্শনই ছিল কবিগুরুর দর্শন। তাঁর কাছ থেকেই আমাদের জাতীয় সংগীত ও ‘বাংলাদেশ’ নামের বানানটি নেওয়া হয়েছে। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্পী, চিত্রশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, ছোট গল্পকার ও ভাষাবিদ। আশি বছরের জীবন সাধনায় রবীন্দ্রনাথ মৃত্যু নিয়ে গভীর জীবন তৃষ্ণায় লিখেছেন, ‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে/ মানবের মাঝে আমি বাঁচিবার চাই। এই সূর্যকরে এই পুষ্পিত কাননে/ জীবন হৃদয় মাঝে যদি স্থান পাই।’ রবীন্দ্রনাথ অবশ্য জন্ম-মৃত্যুর মাঝে তফাত দেখেছেন খুব সামান্যই। সৃষ্টিই যে এই নশ্বর জীবনকে অবিনশ্বরতা দেয় সে কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন বলেই তিনি অমন দৃঢ়তায় বলতে পেরেছেন ‘মৃত্যু দিয়ে যে প্রাণের/মূল্য দিতে হয়/ সে প্রাণ অমৃতলোকে/ মৃত্যুকে করে জয়।’ বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির এমন কোনো দিক নেই যা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লেখালেখি করেননি। জীবনের শেষপর্যায়ে তিনি চিত্রকর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন। রবিঠাকুরই বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন।
প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। প্রসঙ্গত, ১২৬৮ সনের ২৫ বৈশাখ ইংরেজি ১৮৬১ সালের ৮ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ।