জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তি ও চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবির আন্দোলনে যুক্ত থাকার অপরাধে একের পর এক বরখাস্ত হচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কেউ কেউ পেয়েছেন অব্যাহতি। আবার বদলি আতঙ্কও বিরাজ করছে এনবিআরের অধীনস্থ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে। কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করার আদেশে বলা হচ্ছে, বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় তাদের এই শাস্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এদের কমবেশি সবাই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় গতকাল আরও তিনজন কর পরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান পৃথক তিনটি আদেশে সই করেন। এ ছাড়া গতকাল চার কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। গত কয়েক দিনে সব মিলিয়ে ২৭ জন কর কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হলো। একই সঙ্গে যাচাইবাছাই শেষে আরও অনেকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা যায়। গতকাল বরখাস্ত হয়েছেন আয়কর, গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের আবদুল্লাহ আল মামুন, কর অঞ্চল-৬ এর কর পরিদর্শক রুহুল আমিন এবং কর অঞ্চল-২ এর কর পরিদর্শক লোকমান আহমেদ। এনবিআরের পৃথক তিনটি আদেশে বলা হয়েছে, ঢাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ২২ জুন জারি করা পাঁচজন উপকর কমিশনারের বদলির আদেশ অবজ্ঞাপূর্বক প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বদলি আদেশ অমান্যকারীদের সমর্থন করায় এদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৯ (১) ধারা মোতাবেক তাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তারা সাময়িক বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক খোরপোশ ভাতা পাবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। গত ১২ মে সরকার এনবিআর পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি বিভাগ গঠনের অধ্যাদেশ জারি করে। এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে এনবিআরের কর্মকর্তারা আন্দোলনে নামেন। সরকারের পক্ষ থেকে সংশোধনের আশ্বাসের পর কিছুটা বিরতি এলেও চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন চলতে থাকে। পরবর্তীতে ২২ জুন পাঁচ কর্মকর্তাকে বদলি করে এনবিআর। বদলি আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনকারীরা ২৪ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে আদেশের কপি ছিঁড়ে ফেলেন। পরে ৩০ জুন ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত হয়।