বাংলাদেশি পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে হিমালয়কন্যা নেপাল। ছুটি বা সাপ্তাহিক অবসর কিংবা সুযোগ পেলেই বাংলাদেশিরা ছুটছেন এ পর্যটন গন্তব্যে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নেপালে বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে গাণিতিক হারে। কম খরচ, সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার আকর্ষণ নেপালকে বাংলাদেশিদের কাছে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করছে। এশিয়ান বিজনেস আইকনিক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে নেপালের বন ও পরিবেশমন্ত্রী আইন বাহাদুর শাহী বলেন, ‘নেপাল সরকার পর্যটন খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে পর্যটকদের জন্য নানান সুযোগ সুবিধা বাড়িয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশি সংখ্যক পর্যটন স্পটগুলো দেখতে আসছেন বিদেশিরা। বিশেষ করে বাংলাদেশি পর্যটকদের আসার হার বেড়েছে। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং পর্যটন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আগামীতে নেপালে বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা আরও বাড়বে; যা উভয় দেশের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।’
নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী- গত কয়েক বছর ধরে নেপালে ক্রমাগতভাবে বাড়ছে বাংলাদেশি পর্যটকদের আগমন। ২০২৩ সালে নেপাল ভ্রমণ করেন ৩৬ হাজার ৪৮৩ জন বাংলাদেশি। যা ২০২২ সালের তুলনায় প্রায় ৪৪ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৩৮৪ জন। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন ২০২৪ সাল এবং চলতি ২০২৫ সালে এ সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। যদিও ২০২৪ ও ২০২৫ সালের সম্পূর্ণ পরিসংখ্যান এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে বিভিন্ন ট্যুর অপারেটর এবং এয়ারলাইনসগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে নেপালগামী ফ্লাইটগুলোতে যাত্রীদের চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
জানা যায়, প্রতিবেশী অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় নেপাল ভ্রমণ অনেক বেশি সাশ্রয়ী। থাকা-খাওয়া এবং ঘুরে বেড়ানোর খরচ সহনীয় পর্যায়ে থাকায় মধ্যবিত্ত বাংলাদেশিরা সহজে পরিবার নিয়ে সেখানে যাচ্ছেন। ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুতে সরাসরি রয়েছে একাধিক এয়ারলাইনসের ফ্লাইট। যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন অনেক সহজ ও সময় সাশ্রয়ী। এর মধ্যে যোগ হয়েছে প্রতিবেশী ভারতের ভ্রমণ ভিসার ওপর কড়াকড়ি। নিকটবর্তী প্রতিবেশী হওয়ায় বাংলাদেশিদের মধ্যে হিমালয় কন্যা নেপালের প্রতি আগ্রহ কয়েকগুণ বেড়েছে। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত নেপালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বিশেষ করে পোখরা, নাগরকোট এবং এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের আকর্ষণ পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এ ছাড়া দুই দেশের সংস্কৃতি ও খাদ্যরীতিতে রয়েছে অনেক মিল। ফলে বাংলাদেশিরা সেখানে গিয়ে সহজেই মানিয়ে নিতে পারেন। নেপাল সরকার এবং সে দেশের পর্যটন সংস্থাগুলো বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে চিহ্নিত করে বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ঢাকায় ভ্রমণ মেলার আয়োজন এবং বিভিন্ন প্যাকেজ অফার করা হচ্ছে। তাই নেপাল অভিমুখে নেমেছে বাংলাদেশি পর্যটকদের ঢল।