গরু নয় মানুষের কাঁধেই জুড়ে দেয়া হলো জোয়াল। তারপর করানো হলো হালচাষ। আর সেই ঘটনা দাঁড়িয়ে দেখল গ্রামসুদ্ধ মানুষ।
এর পেছনের কারণ বিয়ে। তাই নতুন দম্পতিকে গরুর মতো জোয়াল জুড়ে দিয়ে পিছনে ছড়ি নিয়ে তাড়া করেছেন কয়েক জন। হাল চাষের সময় গরু-বলদকে যেমন মারধর করা হয়ে থাকে, তেমনই করা হচ্ছে ওই দুই জনের সাথে। তাই দেখে কেউ হাততালি দিচ্ছেন, কেউ হর্ষধ্বনি। হাসাহাসি করছেন সকলে। দূরসম্পর্কের দুই আত্মীয় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ায় তাঁদের এই ভাবেই শাস্তি দেয় ভারতের গ্রামবাসীরা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার রায়গড়া জেলায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রায়গড়ার কাঞ্জামাঝিরা গ্রামের বাসিন্দা দুই যুবক-যুবতী অনেক দিন ধরে প্রেম করতেন। সম্প্রতি তারা বিয়ে করেন। তাতে তাদের পরিবারের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। কিন্তু বিয়ের খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে যান গ্রামবাসীরা। তাদের দাবি, গর্হিত কাজ করেছেন ওই দু’জন। কারণ, নারী যাঁকে ভালবেসে বিয়ে করেছেন, সেই যুবক তাঁর দূরসম্পর্কের জেঠতুতো দাদা। এই বিয়েকে ‘পাপ’ বলে নবদম্পতিকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসা হয় ধানের খেতে। তাদের ঘাড়ে জোয়াল তুলে দেওয়া হয়। লাঙল করতে বলা হয় নবদম্পতিকে দিয়ে।
এত জনের রোষের মুখে সেটাই করতে বাধ্য হয়েছেন নবদম্পতি। কিন্তু এখানেই ‘শাস্তি’ শেষ হয়নি। স্বামী-স্ত্রী যখন হাল টানছেন, তখন পিছন থেকে তাঁদের ছড়ি দিয়ে মারতে দেখা যায় কয়েক জনকে।
লাঙল করানোর পরে দম্পতিকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি মন্দিরে। গ্রামবাসীর নিদান, এই বিয়ে করে যে পাপ করেছেন দুই যুবক-যুবতী, তার প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য তাঁদের অনেক কিছুই সইতে হবে। সূত্রের খবর, দু’জনের ‘শুদ্ধিকরণ’ হয় মন্দিরে।
ওই ঘটনার ভিডিও এবং খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শোরগোল ওড়িশার প্রশাসনের অন্দরে। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। শুক্রবার রায়গড়ার জেলা পুলিশ সুপার এস স্বাতী কুমার জানান, পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি মামলাও রুজু করেছেন তাঁরা। কারা এই ঘটনা ঘটানোর নেপথ্যে রয়েছেন, তাদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র: এনটিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল