খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশায় নিজ বাড়ির সামনে প্রকাশ্যে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সাবেক যুবদল নেতা মোল্লা মাহবুবুর রহমান খুন হয়েছেন। খুলনা বিএনপির শীর্ষ নেতারা এটিকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন। তারা বলছেন, একের পর এক খুন হলেও নগর পুলিশ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নিহত মাহবুব শুক্রবার দুপুরে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশায় নিজ বাড়ির সামনে ব্যক্তিগত গাড়ি পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে আসা তিন ব্যক্তি মাহবুবকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাহবুব মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দুর্বৃত্তরা মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার দুই পায়ের রগ কেটে দিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাহবুবকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মাহবুব দৌলতপুর থানা যুবদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় রাম দা হাতে তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় ওই রাতেই মাহবুবকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এ ছাড়া তিনি দৌলতপুর থানা বিএনপি অফিস ভাঙচুর মামলার বাদী ছিলেন। এই মামলায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েক নেতাকে আসামি করা হয়েছিল। প্রকাশ্যে খুনের বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী জানান, ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহসহ আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) খন্দকার হোসেন আহমেদ বলেন, ঘটনার সঙ্গে কারা সম্পৃক্ত তাদের খুঁজে বের করা হবে। খুলনা নগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা বলেন, পরিকল্পিতভাবে মাহবুবকে খুন করা হয়েছে। এটি রাজনৈতিক হত্যা। তিনি বলেন, খুলনায় একের পর খুন হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। গত ১০ মাসে ২৭টি হত্যাকা ঘটেছে। পাড়া-মহল্লায় সন্ত্রাসীদেরকে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। এর দায় পুলিশ কমিশনার এড়াতে পারেন না। তার পদত্যাগ করা উচিত।