রাজধানীতে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে জনজীবন কিছুটা থমকে গেলেও কাঁচাবাজারে এর প্রভাব পড়েনি তেমন। টানা বৃষ্টির মধ্যে বাজারে সবজিতে তেমন প্রভাব না পড়লেও সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে মাছ ও ব্রয়লার মুরগির দাম। অন্যান্য পণ্যের দাম ছিল আগের মতোই। তা ছাড়া বৃষ্টির মধ্যে ক্রেতার উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে কম। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মালিবাগ ও মগবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে অনেক দোকানই দেরিতে খুলেছে। আবার কিছু দোকান বন্ধও দেখা গেছে। বাজারে যেসব দোকান খোলা ছিল, সেখানেও ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
সবজি বিক্রেতারা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ভারী বৃষ্টি হলেও তার আগের রাতেই পাইকারি বাজারে সবজির জোগান ঠিক ছিল। তবে দূরদূরান্তের এলাকা থেকে সরবরাহ কিছুটা কমেছে। যদিও বাজারে ক্রেতার চাপ না থাকায় সেটা দামে প্রভাব ফেলেনি। বাজারে এখন পটোল, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গার মতো সবজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। বরবটি, বেগুন, কচুর লতি, কাঁকরোল পাওয়া যাচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহেও সবজিগুলোর দাম একই ছিল।
মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা কামরুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বৃষ্টিতে বেচাকেনা কম। আগের দিনের কিছু সবজি থেকেই গেছে। আজও (গতকাল) বেশি আনিনি। দামও বাড়াইনি।
এদিকে কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব মাছের দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। মুরগির বাজারেও একই চিত্র।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা ভারী বৃষ্টির কারণে বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও মাছের সরবরাহ কমেছে। সরবরাহ কম থাকায় সেগুলোর দাম সামান্য বেড়েছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। অবশ্য মালিবাগ বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৮৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়।
মুরগি বিক্রেতা আবদুল মান্নান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ভারী বৃষ্টির কারণে মুরগির গাড়ি আসতে পারেনি। শুক্রবার সকালে মুরগি এলেও তা ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে ক্রয় করতে হয়েছে। তাই মুরগির দাম সামান্য বেশি। সরবরাহ বাড়লে আবার দাম কমে যাবে।
এদিকে কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি পাবদা মাছ ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০, পাঙাশ ২০০, রুই ৩০০ থেকে ৩৩০, কাতল ৩৫০, টেংরা ৬৫০, কোরাল ৭৫০ ও কই ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কম ছিল। এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ডিমের বাজারে এখনো বড় কোনো পরিবর্তন নেই। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দরে। তবে পাড়ার দোকানে ১৪৫ টাকা দরে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজারে নতুন করে কোনো পরিবর্তন আসেনি। পুরোনো মিনিকেট চাল এখনো ৭২ থেকে ৮? টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। নতুন মিনিকেট চালের দাম একটু কমেছে। ২৫ কেজির বস্তা ২ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যা আগে ছিল ২২০০ টাকা। অন্যদিকে তেল, ডাল, চিনি ইত্যাদি মুদিপণ্যের দামে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি। সবকিছু বিক্রি হচ্ছে আগের দামে।