বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে আশরাফুজ্জামান মিনহাজ নামে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহসম্পাদক মো. ইলতুৎমিশ সওদাগর এ্যানি বাদী হয়ে মামলাটির আবেদন করেন। তারেক রহমানই এ মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে তিনি জানান। মামলার বাদী বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে নিজেকে অক্সফোর্ড ইউনির্ভাসিটির প্রফেসর হিসেবে পরিচয় দেওয়া এ প্রতারক আশরাফুজ্জামান হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দেন। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে তাঁকে পরবর্তীতে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে স্থান করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে দাবি করেন। মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বিষয়টি দলের নজরে আনেন।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়, আশরাফুজ্জামান একজন মেধাবী শ্রেণির প্রতারক। নিজেকে কখনো কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক, কখনো যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর পরিচয় দিয়ে সমাজের বিত্তশালী লোকের খুব কাছে যাওয়ার এবং বিভিন্ন কাজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদানের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয় করাই তার মূল পেশা। ২০০৯ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতারণার অভিযোগে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে ছিলেন। জুলাই-আগস্টের বিপ্লব পরবর্তীতে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় পরিবর্তন করে ‘বিএনপি’ এর স্ট্যান্ডিং কমিটির সমন্বয় ও বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে সবার কাছে ক্ষমতাধর হিসেবে সমাদৃত হওয়ার জন্য বিদেশি সিম দিয়ে ফেসটাইম, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ দ্বারা টার্গেট করে ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলেন। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছে বুঝিয়ে ভিকটিমের কাছে আস্থা অর্জন করে অর্থ আদায় করে। চলতি মাসে আসামি তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মামলার ২ নম্বর সাক্ষী মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মনোনীত স্ট্যান্ডিং কমিটির সমন্বয়কারী ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন। এর আগে ২০০৮ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সেনা সমর্থনে আওয়ামী সরকারে উত্থানের সময় এই প্রতারকের আবির্ভাব ঘটে। ২০০৯ সালে সাহারা খাতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর তার জামাতা পরিচয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের চাকরির পদোন্নতি, বদলি এবং নিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ সম্পদ অর্জন করে। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের ও পুলিশের ভয়ভীতি দেখিয়ে নিরীহ ও নিরপরাধ ব্যক্তিদের কাছ থেকেও এ প্রতারক বিপুল অর্থ আদায় করার বিষয়ে জ্ঞাত হয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে জেল হাজতে পাঠান।