ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও নগরকান্দা উপজেলার মধ্যে পড়েছে। ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পদ্মা সেতু থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার। এ এক্সপ্রেসওয়ে, এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সার্ভিস সড়ক ও মহাসড়কে ঈদযাত্রায় গাড়ির চাপ অনেক গুণ বেড়ে যায়। সড়কের এই অংশ দুর্ঘটনাপ্রবণ। সারা বছর প্রায় প্রতিনিয়ত এ সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার ফরিদপুরের ভাঙ্গা। ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সংযোগস্থল ভাঙ্গা। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ভাঙ্গা। একাধিক সমস্যা রেখেই এ মহাসড়কে ঈদযাত্র শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে সড়ক যোগাযোগের দিক দিয়ে আরও অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে ভাঙ্গা। এ ভাঙ্গা হয়েই গাড়ি ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, মাগুরা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, ভোলা, বরিশাল, বরগুনা, মাদারীপুর ১৮ জেলার মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করে। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গ থেকে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য জেলায় মানুষ যাতায়াত করে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ এক্সপ্রেসওয়ে ও মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বেপরোয়া গাড়ির গতি, ওভারটেকিং প্রতিযোগিতা, মহাসড়কে অবৈধ যানবাহনের যত্রতত্র চলাচল, লাইসেন্সবিহীন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন কিশোর ও তরুণদের হেলমেটবিহীন বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, এক্সপ্রেসওয়ের টোল ফাঁকি দিয়ে পাশের সংযোগ সড়ক দিয়ে বাস ট্রাকের অবাধ চলাচল। ঈদযাত্রায় এ সড়ক আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ সময় মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ বৈধ, অবৈধ যানবাহনের পাশাপাশি বাস ও ট্রাকের চলাচল অনেক গুণ বেড়ে গেছে। ঈদযাত্রায় ট্রাকেও গাদাগাদি করে মানুষ চলাচল করতে দেখা যায়। ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের বগাইল নামক স্থানে রয়েছে টোলপ্লাজা। এ টোলপ্লাজায় টোল ফাঁকি দেওয়ার জন্য বড় গাড়ি বিশেষ করে বাস, ট্রাক সার্ভিস রোড দিয়ে চলাচল করে। যে কারণে সার্ভিস রোডের ৭ কিলোমিটার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ছাড়া এ বছর নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে চুমুরদী ইউনিয়নের বাবলা তলা পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার মহাসড়ক। মহাসড়ক সম্প্রসারণের জন্য কয়েক মাস ধরে সড়কের দুই পাশে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে। এতে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের সাইড দিতে সমস্যা হয়। ভাঙ্গা-ফরিদপুর মহাসড়কের ভাঙ্গা থেকে তালমা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়ক এ বছর নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ। গত বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির কারণে এ মহাসড়কে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তা সংস্কার না করার কারণে এ সড়কে যানবাহন চালাতে চালকদের হিমশিম খেতে হয়।
এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর জোনের পুলিশ সুপার শাহিনুর আলম খান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এক্সপ্রেসওয়ে ও মহাসড়কে যাত্রা নিরাপদ করতে আমরা বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছি। পুলিশের প্যাট্রোল বাড়াচ্ছি। সার্বক্ষণিক মহাসড়কে পুলিশ মোতায়েনের ব্যবস্থা করেছি। যেখানে যেখানে যানজট হয়, সে জায়গাগুলো চিহ্নিত করে ভ্রাম্যমাণ দোকান উচ্ছেদ কাজ চলমান রয়েছে। সার্ভিস রোডে বড় গাড়ি পেলে আমরা মামলা দিচ্ছি। সব মিলে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। আশা করি এবারের ঈদযাত্রা নিরাপদ হবে।