রাজধানীতে র্যাব পরিচয়ে দুর্র্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় মাইক্রোবাসসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- আল আমিন হাওলাদার, ওমর ফারুক, ফারুক বেপারী, শহিদুল ইসলাম শেখ, মানিক, জহিরুল ইসলাম জহির, আল আমিন আহম্মেদ ও বারেক। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, র্যাবের জ্যাকেট, হ্যান্ডকাফ, হকিস্টিক, বেতের লাঠি, ৩০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন ও কিছু প্রসাধনীসামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
নিউমার্কেট থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে দুবাই থেকে ঢাকা এয়ারপোর্টে পৌঁছান ফারুক মিয়া। তিনি এয়ারপোর্ট থেকে বাসার উদ্দেশে একটি প্রাইভেট কারে রওনা হন। তার সঙ্গে ছিল দুবাই থেকে আনা ১০০ গ্রাম স্বর্ণের কয়েকটি চুড়ি, দুটি স্যামস্যাং এস-২৫ আল্ট্রা মোবাইল ফোন, একটি আইফোন-১২, একটি অ্যাপল ম্যাকবুক, একটি আইপ্যাড, একটি অ্যাপল ওয়াচ, তিনটি কম্বল ও বিভিন্ন ধরনের মালামাল। যার আনুমানিক মূল্য ১৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা। তিনি রাত ৩টার দিকে নিউমার্কেটের হাতিরপুল রোডে অবস্থিত তার বাসার সামনে উপস্থিত হলে তাকে অনুসরণ করা একটি কালো রঙের নোহা গাড়ি তার গাড়ির পথরোধ করে। পথরোধ করা গাড়ি থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত ৫-৬ জন লোক নেমে নিজেদের র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে ফারুককে জোরপূর্বক গাড়ি থেকে টেনেহিঁছড়ে নামান এবং তার সঙ্গে থাকা মালামাল তাদের গাড়িতে নিয়ে চলে যান। তারা ভুক্তভোগী ফারুককে গাড়িতে করে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। পরে ভোরে মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হাতিরঝিল এলাকায় নামিয়ে দেন। এ ঘটনায় ১৮ ফেব্রুয়ারি ফারুক মিয়া নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করেন।
সূত্রে আরও জানা গেছে, এ মামলার তদন্ত ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঢাকা, বরিশাল ও পটুয়াখালী থেকে ওই ৮ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্য। তারা বিদেশ থেকে স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে আসা যাত্রীদের এয়ারপোর্ট থেকে অনুসরণ করে রাজধানীতে তাদের সুবিধাজনক স্থানে পথরোধ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা র্যাব, ডিবি ইত্যাদি পরিচয় দিয়ে সর্বস্ব ডাকাতি করে নেয়। এভাবে ডাকাত চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আনুমানিক ১২-১৩টি ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। নিউমার্কেট থানা পুলিশ বলছে, দেশের বিভিন্ন থানায় গ্রেপ্তার মো. ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও ডাকাতিসহ মোট ৪টি, মো. ফারুক বেপারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ডাকাতির মোট দুটি, মো. শহিদুল ইসলাম শেখের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতিসহ মোট সাতটি, মো. মানিকের বিরুদ্ধে ছিনতাই, দস্যুতা, ডাকাতি ও মাদকসহ মোট ৯টি, জহিরুল ইসলাম জহিরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতিসহ মোট ১২টি, আল আমিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি ও মাদকসহ মোট ৫টি, মো. বারেকের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনসহ মোট ১৪টি মামলা রয়েছে।