ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে জেরুজালেমে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনের কাছে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করছেন বন্দিদের পরিবার ও তাদের সমর্থকরা।
ইসরায়েলে আবারও জোরালো হয়েছে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ। গতকাল সকাল থেকে জেরুজালেমে শুরু হয়েছে এ প্রতিবাদ, যা আগামী শনিবার পর্যন্ত চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আয়োজকরা। ইসরায়েলি পাবলিক ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের খবর অনুযায়ী, এ বিক্ষোভকে ‘বিশৃঙ্খলা দিবস’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু ছিল প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবন। সেখানে বিক্ষোভকারীরা তাঁবু স্থাপন করে এবং আবর্জনা ফেলার কন্টেইনারে আগুন লাগিয়ে ‘আগুনের বলয়’ তৈরি করে। এতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি দুটি, গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে আটক সব বন্দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি চুক্তি সম্পাদন করা। এ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে তেল আবিবের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির প্রযুক্তি সংস্থা, যেমন মানডে, উইক্স এবং ফাইভার, তাদের কর্মীদের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এমনকি বিক্ষোভস্থলে পৌঁছানোর জন্য তেল আবিবের সারোনা কমপ্লেক্স থেকে বিশেষ বাসেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশ কিছু বড় বিনিয়োগ তহবিলও এ উদ্যোগে যোগ দিয়েছে। বিক্ষোভের তীব্রতা বাড়তে থাকায় জেরুজালেমের প্রবেশদ্বার এবং প্রধান মহাসড়কগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।-এএফপি
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় তেল আবিবের প্যারিস স্কোয়ারে একটি কেন্দ্রীয় সমাবেশের মাধ্যমে এ কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটবে।
ফিলিস্তিন স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা বন্ধ করতে পারবে না ইসরায়েল : গাজায় হামলা চালিয়ে অথবা আরও ভূখণ্ড দখল করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রচেষ্টা ইসরায়েল থামাতে পারবে না। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ মঙ্গলবার এ কথা বলেন। প্যারিস থেকে এএফপি জানায়, নিউইয়র্কে আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করা কয়েকটি দেশের মধ্যে ফ্রান্স অন্যতম। বেলজিয়াম সর্বশেষ পশ্চিমা দেশ হিসেবে এ পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে কথা বলার পর মাখোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এর এক পোস্টে বলেন, কোনো সামরিক হামলা, জমি দখল বা মানুষকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ তথাকথিত দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের অগ্রগতি থামাতে পারবে না। এদিকে ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধান নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে অংশ নিতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না দেওয়াকে তিনি ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানও মার্কিন এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত। হোস্ট কান্ট্রি অ্যাগ্রিমেন্ট অনুযায়ী ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। মাখোঁর এই হস্তক্ষেপ এমন সময় এসেছে, যখন গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল তাদের অভিযান জোরদার করেছে। এ যুদ্ধের কারণে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিরা চরম মানবিক সংকটে পড়েছে। এ প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের ওপরও ক্রমাগত চাপ বাড়ছে।