ইসরায়েলি চিকিৎসকরা গাজা যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি করার আহ্বান জানিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন। হামাসের কাছ থেকে বন্দিদের ফিরিয়ে আনা এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য একটি বিস্তৃত চুক্তির দাবি জানিয়ে তেল আবিবের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করেন তারা।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা এবং আল জাজিরার সানাদ ফ্যাক্ট-চেকিং এজেন্সির যাচাই করা ফুটেজে বিক্ষোভকারীদের একটি দলকে প্ল্যাকার্ড ধরে, ট্র্যাফিক অবরোধ করে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চিকিৎসকরা বলেন, যুদ্ধ বন্ধ করুন এবং সবাইকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনুন। তাদের দাবি, তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে এবং ইসরায়েলকে ভুল পথ থেকে সরিয়ে আনতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ আগ্রাসন নিহতের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল সকালে নতুন করে আরও ১৭ জনকে ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে যাদের মধ্যে ছয়জনই ত্রাণের অপেক্ষায় ছিলেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী সেখানে অনাহারে এখন পর্যন্ত ৩৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজা শহরে নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার সময় শাতি শরণার্থী শিবিরের কাছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর পরেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় সংঘাত চলছে। সেখানে দখলদার বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৩ হাজার ৫৫৭ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৬০ জন। নিহতদের অর্ধেকই নারী ও শিশু বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ।
রিজার্ভ সেনাদের ডেকেছে ইসরায়েল : গাজা সিটিতে হামাসের বিরুদ্ধে স্থল ও আকাশ অভিযান আরও বিস্তৃত করার অংশ হিসেবে ইসরায়েল গতকাল থেকে ধাপে ধাপে রিজার্ভ সেনাদের ডাকা শুরু করেছে। এ প্রক্রিয়ায় মোট ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনা যুক্ত হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। পাশাপাশি অতিরিক্ত ২০ হাজার সক্রিয় সেনার দায়িত্বও বাড়ানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সেনারা বর্তমানে উত্তর ও মধ্য গাজার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। কয়েকদিনে গাজা সিটির পশ্চিমাংশের জেইতুন ও শুজাইয়া এলাকায় হামলা ও প্রবেশ করেছে দখলদার বাহিনীটি। এক সময় প্রাণচঞ্চল জেইতুনে বাজার, স্কুল ও ক্লিনিক থাকলেও সাম্প্রতিক অভিযানে এলাকা কার্যত পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। ইসরায়েল এটিকে বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করেছে। গাজা সিটি হামাসের রাজনৈতিক ও সামরিক ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ইসরায়েলি বাহিনী একাধিকবার অভিযানে গেলেও শহরের ভিতরে এখনো সুবিশাল টানেল নেটওয়ার্ক সক্রিয় রয়েছে বলে দাবি করছে তেলআবিব।-আল জাজিরা
একই সঙ্গে, শহরটি উত্তর গাজার কয়েক লাখ বেসামরিক মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল, যেখানে যুদ্ধ আর দুর্ভিক্ষ দুটি হুমকিই সমানভাবে ঘনিয়ে এসেছে। জাতিসংঘের খাদ্যসংকটবিষয়ক সংস্থা সম্প্রতি জানিয়েছে, গাজা সিটিতে দুর্ভিক্ষ চলছে। -আল জাজিরা