দুবার বৃষ্টিতে বন্ধ হয়েছে খেলা। প্রথমবার খেলা বন্ধ ছিল আধাঘণ্টা। দ্বিতীয়বার বন্ধ হওয়ার পর আর খেলা মাঠেই গড়ায়নি। টানা বৃষ্টিতে আম্পায়ারদ্বয় ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। ফলে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজ বাংলাদেশ জিতেছে ২-০ ব্যবধানে।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের পাশে নাম লিখতে পারলেন না লিটন দাস। তবে সাকিব আল হাসানকে টপকে গেছেন। বাইলেটারাল সিরিজে সবচেয়ে বেশিবার অপরাজিত থাকার একক রেকর্ড এখনো সাবেক অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি পাঁচ ম্যাচ সিরিজে তিনবার অপরাজিত ছিলেন। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে অপরাজিত থাকার সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল টাইগার বর্তমান অধিনায়ক লিটনের। গতকাল যদি অপরাজিত থাকতেন, তাহলে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজে টানা অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়তেন টাইগার অধিনায়ক। বাংলাদেশের আর কোনো ক্রিকেটারের যা নেই। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ৫৪, দ্বিতীয় ম্যাচে ১৮ রানে অপরাজিত থাকার পর গতকাল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ওপেন করে আউট হন ৭৩ রানে। ৪৬ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসটি খেলে টাইগার অধিনায়ক টপকে গেছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক সাকিবকে। লিটন এখন টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে এককভাবে সর্বোচ্চ হাফ সেঞ্চুরির মালিক। ১২৯ ম্যাচে সাকিবের হাফ সেঞ্চুরি ১৩টি। ১১০ ম্যাচে লিটনের হাফ সেঞ্চুরি ১৪টি। মাহমুদুল্লাহর হাফ সেঞ্চুরি ১৪১ ম্যাচে আটটি।
লিটনের রেকর্ড গড়ার ম্যাচটি বৃষ্টিতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে দুবার। ৪.১ ওভারে ১ উইকেটে ৬০ রান তোলার পর প্রথমবার বৃষ্টিতে বন্ধ হয়। ৩০ মিনিট বন্ধ থাকার পর পুনরায় শুরু হয়। এরপরই ব্যাটিং তাণ্ডব শুরু হয় লিটনের। খেলেন হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস। তার ব্যাটিং তাণ্ডবে ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে সাইফ হাসানের উইকেট হারিয়ে ৬৭ রান করে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে চার নম্বরে বাটিং করলেও দ্বিতীয়টিতে নামার সুযোগ হয়নি সাইফের। ব্যাটিং অনুশীলনের জন্য গতকাল লিটনের সঙ্গে ওপেন করেন। ৮ বলে ২ চারে ১২ রান করার পর আউট হন। সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় গতকাল পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে খেলেছে টাইগাররা। দুই ওপেনার তানজিদ তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, শেখ মেহেদি, মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদকে বসিয়ে রাখা হয় সাজঘরে। তাদের পরিবর্তে নুরুল হাসান সোহান, শামীম হোসেন পাটোয়ারি, রিশাদ হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে খেলানো হয়। টস হেরে ব্যাটিং করে লিটন বাহিনী। দ্বিতীয়বার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১৮.২ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৪ রান। যা নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইগারদের সর্বোচ্চ স্কোর। আগের সর্বোচ্চ দলগত স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ১৫৯ রান। ২০২৪ সালে ১৩ জুন জ্যামাইকার কিংসটাউনে টি-২০ বিশ্বকাপে স্কোরটি করেছিল। এ ছাড়া যে কোনো দলের বিপক্ষে টাইগারদের দলগত সর্বোচ্চ ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। স্কোরটি ছিল ৫ উইকেটে ২১৫ রান।
ব্যাটিংয়ের জন্য বাংলাদেশ গতকাল ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনে। ওপেন করেন লিটন ও সাইফ। তিন নম্বরে তাওহিদ হৃদয়। কিন্তু ১৪ বলে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি। চারে ব্যাটিং করেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ১৯ বলে ২১ রান করেন এক চারে। ১৪.৩ ওভারে ১২২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন দুই উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকের আলি অনিক ও সোহান। সোহান খেলতে নামে ২ বছর ১০ মাস পরে। ২০২২ সালে ৬ নভেম্বর অ্যাডিলেডে টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ খেলেছিলেন। বৃষ্টিতে বন্ধ হওয়ার আগে ১১ বলে ২ ছক্কায় ২২ রানের অপরাজিত ছিলেন সোহান। জাকের ১৩ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ২০ রানে। টাইগারদের ব্যাটিং ঝড়েও ৪ ওভারে ৫৩ রানের খরচে ৩ উইকেট নিয়েছেন কাইলি ক্লেইন।