ভারতীয় পণ্য আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ৫০ শতাংশ শুল্কের আঘাতে টালমাটাল হয়ে উঠেছে ভারতের অর্থনীতি। নিজেদের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার হুমকির মুখে পড়ায় তার প্রভাব পড়েছে ভারতের মুদ্রা ও শেয়ারবাজার উভয়ের ওপরই। এরই মধ্যে রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে ভারতীয় রুপির দর। গতকাল লেনদেনের শুরুতেই মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার দর আরও ছয় পয়সা কমে দাঁড়ায় ৮৮ দশমিক ১৬ রুপিতে। ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক তহবিলের বহিঃপ্রবাহ এবং ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে রুপির ওপর চাপ বেড়েছে। ফরেঙ ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার লেনদেনের এক পর্যায়ে রুপির রেকর্ড সর্বনিম্ন ৮৮ দশমিক ৩৩-এ নেমে যায়, যদিও দিনের শেষে সামান্য ঘুরে দাঁড়িয়ে ৮৮ দশমিক ১০-এ স্থির হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপ ভারতীয় রপ্তানির প্রতিযোগিতামূলক শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। -দ্য হিন্দু
এর প্রভাব মুদ্রা ও শেয়ারবাজার দুটির ওপরই পড়ছে। গত তিন সেশনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন ডলার তুলে নিয়েছেন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্কের সমালোচনা করে চীনের এসসিও সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠককে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো।
তিনি বলেন, ‘শি জিনপিং এবং পুতিনের সঙ্গে মোদির ঘনিষ্ঠতা দেখা লজ্জাজনক। জানি না তিনি (মোদি) কী ভাবছেন। আশা করি, তিনি বুঝবেন যে তার রাশিয়ার সঙ্গে নয় বরং আমাদের সঙ্গে থাকা দরকার।’ মোদির এসসিও সম্মেলনে যোগ দেওয়া এবং পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার এক দিন পরই নাভারো এই মন্তব্য করলেন। ‘শুল্কের মহারাজা’ : ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর শুল্ক আরোপ করার পর থেকে দেশটির রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের কড়া সমালোচনা করছেন নাভারো। তার অভিযোগ, ভারত যে অপরিশোধিত তেল রাশিয়া থেকে কিনছে, সেই অর্থ দিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাচ্ছেন পুতিন।
এর আগে নাভারো ভারতকে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘শুল্কের মহারাজা’ হিসেবে। তার দাবি, বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে ভারতের আরোপিত শুল্ক সবচেয়ে বেশি এবং দেশটি সেটি স্বীকার করতে নারাজ।