সুদানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে চলমান যুদ্ধে লিপ্ত আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর চালানো হামলায় অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন বলে গতকাল জানিয়েছেন উদ্ধার কর্মীরা।
পোর্ট সুদান থেকে এএফপি জানায়, টানা ছয় দিন ধরে আরএসএফ বাহিনী ড্রোন হামলায় সরকারের অস্থায়ী রাজধানী পোর্ট সুদানে বিদ্যুৎসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে ব্যাপক ক্ষতি করে।
এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সন্ধ্যায় দারফুর অঞ্চলের একটি বাস্তুচ্যুত ক্যাম্পে বিমান হামলায় একই পরিবারের অন্তত ১৪ জন নিহত হন বলে জানান স্বেচ্ছাসেবী ত্রাণকর্মীরা। তাদের ভাষায়, দারফুরের রাজধানী আল-ফাশারের নিকটবর্তী আবু শৌক ক্যাম্পটি শুক্রবার সন্ধ্যায় আরএসএফের ‘তীব্র গোলাবর্ষণের’ লক্ষ্যবস্তু ছিল। হামলায় নিহতদের সবাই একই পরিবারের সদস্য এবং এতে আরও অনেকেই আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা দারফুরের শেষ রাজ্য রাজধানী এল-ফাশারের এ ক্যাম্পে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষ চলছে। এটি আগে দারফুরের ধারাবাহিক সংঘর্ষ এবং ২০২৩ সাল থেকে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত বহু সংখ্যক মানুষের আশ্রয়স্থল। আরএসএফ সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে বারবার আবু শৌক ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে। ক্যাম্পটি জামজাম শিবিরের কাছে অবস্থিত। এপ্রিল মাসে এক ভয়াবহ অভিযান চালিয়ে আরএসএফ এটি দখলে নেয়। সেই শিবিরে একসময় প্রায় ১০ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গতকাল সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আল-ওবাইদের একটি কারাগারে আরএসএফের ড্রোন হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত এবং ৪৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসা সূত্র।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি ও আরএসএফ প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগলোর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব থেকে সূচিত এ যুদ্ধ এখন বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকটে পরিণত হয়েছে বলে জাতিসংঘ মন্তব্য করেছে।
এ যুদ্ধ দেশটিকে কার্যত দ্বিখণ্ডিত করেছে- উত্তর, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চল সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে, আর পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর ও দক্ষিণের একাংশ আরএসএফ ও তাদের মিত্রদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।