ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের মৃত্যুর পর আবারও শক্তিশালী কম্পনে কেঁপে উঠলো আফগানিস্তান।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ৬ দশমিক ২ মাত্রার এ ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। জার্মানির ভূবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র (জিএফজেড) জানিয়েছে, নতুন ভূমিকম্পটি মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে সংঘটিত হয়েছে।
জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস জানিয়েছে, রবিবার থেকে এ নিয়ে তৃতীয়বার একই এলাকায় ভূমিকম্প হলো। প্রথম ধাক্কাটি ছিল সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ, যাতে দুই হাজার দুইশরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
নানগারহার প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র নকিবুল্লাহ রহিমি জানান, সর্বশেষ ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল পাকিস্তান সীমান্তঘেঁষা দুর্গম শিবা জেলায়। প্রাথমিকভাবে বারকাশকোট এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে, তবে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।
মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরতায় আঘাত হানা এই ভূমিকম্পটি রবিবার ও মঙ্গলবারের আগের ধাক্কাগুলোরই ধারাবাহিকতা। কুনার ও নানগারহার প্রদেশে কয়েকটি গ্রাম পুরোপুরি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। লাখো মানুষ গৃহহীন হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ৬০০ জন।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, খাবার, চিকিৎসা সামগ্রী ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা এখন খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবারও উদ্ধারকর্মীরা ধসে যাওয়া বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ বের করেন। তালেবান প্রশাসন জানিয়েছে, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,২০৫ জনে এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৩,৬৪০ জন।
কুনার প্রদেশের বাসিন্দা আলেম জান বলেন, “আমাদের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধু শরীরে থাকা কাপড় ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।” তার পরিবারকে দেখা গেছে গাছতলায় আশ্রয় নিতে, পাশে গুটিকয়েক অবশিষ্ট সামগ্রী রাখা ছিল।
রবিবারের ৬ মাত্রার প্রথম ভূমিকম্পই সবচেয়ে বড় ধ্বংসযজ্ঞ ঘটায়। এরপর মঙ্গলবারের ৫.৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্পে পাহাড় ধসে পড়ে এবং বহু গ্রাম বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, ফলে উদ্ধারকাজও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/নাজিম