যুক্তরাজ্যে কাজ বা পড়াশোনার জন্য যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে যাঁরা পরবর্তীতে রাজনৈতিক আশ্রয় চান, তাঁদের নিয়ন্ত্রণে নতুন কড়াকড়ি আরোপের পরিকল্পনা করছে ব্রিটিশ সরকার। এ উদ্যোগের ফলে পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের জন্য ভিসা পাওয়া কঠিন হতে পারে, এমনটি জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দৈনিক দ্য টাইমস। প্রতিবেদনটি বিবিসি অনলাইনে মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তরের (হোম অফিস) মতে, অনেকেই প্রথমে বৈধ ভিসায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে পরে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। আবেদন মঞ্জুর হলে তাঁরা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পান। সরকারের মতে, এটি অভিবাসন ব্যবস্থার অপব্যবহার।
হোম অফিসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমাদের সামনে যেটি আসছে, সেটি একটি পূর্ণাঙ্গ ইমিগ্রেশন হোয়াইট পেপার। এতে ভঙ্গুর অভিবাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার রূপরেখা থাকবে।”
তবে কোন দেশের নাগরিকেরা সবচেয়ে বেশি ভিসার মেয়াদ অতিক্রম করেন, সেই বিষয়ে ২০২০ সালের পর থেকে কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি হোম অফিস।
২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন এক লাখ আট হাজারেরও বেশি মানুষ, যা ১৯৭৯ সালের পর সর্বোচ্চ। এদের মধ্যে পাকিস্তানের নাগরিক ছিলেন ১০ হাজার ৫৪২ জন, শ্রীলঙ্কার ২ হাজার ৮৬২ জন এবং নাইজেরিয়ার ২ হাজার ৮৪১ জন।
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৭ হাজার ৪৮০ জন ভারতীয় এবং ৯৮ হাজার ৪০০ জন চীনা শিক্ষার্থী ছিলেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার জানিয়েছেন, তিনি বৈধ ও অবৈধ উভয় ধরনের অভিবাসন কমাতে চান, তবে নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেননি।
স্টারমারের পরিকল্পনায় রয়েছে—সমুদ্রপথে বিপজ্জনক যাত্রাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা, বিদেশি শ্রমিকনির্ভর খাতে স্থানীয়দের প্রশিক্ষণ জোরদার করা এবং সামগ্রিকভাবে অভিবাসনের সংখ্যা কমানো।
তবে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান এনভার সলোমন। তিনি বলেন, “কিছু শিক্ষার্থী বা কর্মী হয়তো এমন অবস্থায় রয়েছেন, যেখানে তাঁদের নিজ দেশে ফেরা নিরাপদ নয়। তাই তাঁদের আবেদন সঠিকভাবে বিবেচনা করাই উচিত।”
পুরো পরিকল্পনাটি মে মাসেই একটি নতুন ইমিগ্রেশন হোয়াইট পেপারের মাধ্যমে প্রকাশ করার কথা রয়েছে।
সূত্র: দ্য টাইমস