বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের প্রধান উদ্ভিদ ‘সুন্দরী’ গাছে এখন ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে বন জুড়ে। মে মাসের শুরুতেই গাছে গাছে ফুটে উঠেছে চোখধাঁধানো সুন্দরী ফুল, ছড়িয়ে পড়েছে মৌ-মৌ ঘ্রাণ। এবারের টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টির কারণে প্রায় সব গাছেই একসাথে ফুল ফুটেছে, যা দৃষ্টিনন্দন এক আবহ তৈরি করেছে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জজুড়ে সুন্দরী গাছের আধিক্য থাকায় এই দুই অঞ্চলে এখন ফুলের রাজ্য তৈরি হয়েছে। এ সময়টাতে সুন্দরবনে বেড়াতে আসা দেশি-বিদেশি ইকো-ট্যুরিস্টরা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করছেন এই দৃশ্য। অনেকে স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি ও ভিডিও ধারণ করছেন।
জানা গেছে, সমুদ্র উপকূলের জলাভূমির এই বনটি রাত-দিন ২৪ ঘণ্টায় ৬ বার রূপ বদলালেও মে মাসের শুরুতে সুন্দরী গাছে ফুল আসার পরই সুন্দরবনকে ফলের রাজ্য মনে হয়। তবে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জে সুন্দরী গাছের আধিক্য কম থাকায় ওই দুই রেঞ্জজুড়ে দিগন্ত বিস্তৃত সুন্দরী ফুল দেখা যায় না। সুন্দরবনে ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা-লতা, গুল্ম ও অর্কিড থাকলেও বাগেরহাটের পূর্ব বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জজুড়ে সুন্দরী গাছ অনেক বেশী থাকায় যেদিকে চোখ যায় সে দিকেই এই সময়ে সুন্দরী গাছে ফুল ফুটে থাকতে দেখা যায়।
মে মাস থেকে শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে গাছে গাছে সুন্দরী ফুলে ছেয়ে যায়। বছরের অন্য সময়ের চেয়ে এসময়ে সুন্দরী ফুলের কারণে সুন্দরবনকে মনোমুগ্ধকর মনে হয়। মে মাসের শুরুতে এবার কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টির কারণে সব সুন্দরী গাছেই এক সাথে ফুল ফুটেছে। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে সুন্দরী ফুলের মৌ-মৌ ঘ্রাণ। এখানে মে মাসেও এই দুটি রেঞ্জে পর্যটকরা ঘুরতে আসেন। আর এই সুন্দরী ফুল থেকে ফল পরিপক্ব হয়ে বর্ষা মৌসুমের শেষ ভাগে গাছ থেকে কাদা মাটিতে পড়ে প্রাকৃতিক ভাবেই জন্ম নেয় সুন্দরী গাছ।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, সুন্দরবনে ৩৫ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিনন্দন ও বিস্তৃতভাবে ফুটে থাকে সুন্দরী ফুল, বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলের রেঞ্জগুলোতে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা