তারুণ্য মানে শক্তি-সাহস। তারুণ্যের হাত ধরে পতন হয়েছে ফ্যাসিবাদ শাসনামলের। আগামী রাজনীতিতে তারুণ্যের ছোঁয়া নিয়ে দলকে শক্তিশালী করতে মাঠে নেমেছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী তারুণ্যের যে জোয়ার সেখানে নিজ দলের তরুণদের পাশাপাশি জেন-জি দের দলে টানতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি। আগামী শনিবার চট্টগ্রাম-কুমিল্লা বিভাগের সমন্বয়ে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড ময়দানে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ নামে এক সমাবেশ হবে। নতুন এই কর্মসূচি ঘিরে রাজপথে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে দলটি। এ সমাবেশ ঘিরে পুরো চট্টগ্রামজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। সমাবেশ ঘিরে এরই মধ্যে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জেলা ও মহানগরে চলছে নানা প্রস্তুতি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রামের তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার এ সমাবেশে প্রায় ৫ লাখ লোকের সমাগম হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আজম খাজা বলেন, বিএনপি সবসময় বিশ্বাস করে তরুণরা রাজনীতিতে এলে রাজনীতির আমূল পরিবর্তন আসবে। বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দেউলিয়ত্বের কারণে রাজনৈতিক নেতাদের ওপর যেভাবে হয়রানি, মামলা, গুম ও খুন করেছে তাতে তরুণদের মধ্যে রাজনীতিতে আসার আগ্রহ হারিয়েছে। নতুন বাংলাদেশে তরুণদের রাজনীতির যে আগ্রহ, দেশ ও দেশের মানুষের জন্য তাদের যে মনোভাব তাকে মূল্যায়ন করার জন্য বিএনপি কাজ করছে। তরুণদের ভাবনা, তাদের মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে বিএনপি আগামী রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে কাজ করবে। পাশাপাশি বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফায় তরুণদের জন্য কী কী করবে তা তুলে ধরা হয়েছে। মূলত রাজনৈতিকভাবে তরুণদের সচেতন করা, দেশপ্রেম জাগ্রত করা এবং আগামীর রাষ্ট্র নির্মাণে তাদের চাওয়া জানতে চাওয়া এই সমাবেশের মূল লক্ষ্য।
জানা গেছে, দেশের মোট ভোটারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই তরুণ। ফলে আগামী নির্বাচনে ‘ফ্যাক্টর’ হবে এই তরুণ ভোট। বিষয়টি মাথায় রেখে তরুণ ভোটারদের কাছে টানতে এ সমাবেশ করা হচ্ছে। আগামী ১০ মে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার সমন্বয়ে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগের দিন ৯ মে অনুষ্ঠিত হবে ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার। সমাবেশে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার ৯৯টি উপজেলা ও মহানগরীর নেতা-কর্মীরা অংশ নেবেন।
কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী বলেন, আমরা চাই দেশব্যাপী বিস্তৃত সাংগঠনিক কাঠামোকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি তরুণ-তরুণীর জীবনে আশার আলো জ্বালাতে, যাতে তাঁদের জীবনের ভাগ্য পরিবর্তন হয়, সমস্যার সমাধান ঘটে এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক উন্নয়ন ঘটে। আমাদের লক্ষ্য কেবল একটি রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ নয়, বরং একটি উন্নয়ন ও উৎপাদনমুখী তথা জনবান্ধব সরকার ব্যবস্থার প্রয়াস। যেখানে তরুণরা কেবল ভোটার নয়, বরং আগামীর নীতিনির্ধারক, চিন্তাশীল অংশীদার ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামোর নির্মাতাও তারা।