মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সৌদি আরব, কুয়েত ও জর্ডান সোমবার (৫ মে) ভয়াবহ ধূলিঝড় ও আকস্মিক বন্যার কবলে পড়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এসব অঞ্চলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বিমানবন্দর, বন্দর ও সড়কপথে জারি হয়েছে সতর্কতা। দিনের আলোয় নেমে এসেছে রাতের অন্ধকার।
সৌদি আরবের আল কাসিম প্রদেশে দেখা গেছে বিরল এক দৃশ্য ‘ধুলোর প্রাচীর’। বিশালাকৃতির ধূলিঝড় দ্রুতগতিতে অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে হঠাৎ করেই দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে, দিনদুপুরে চারপাশে নেমে আসে রাতের মতো অন্ধকার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, বিশাল ধুলোর ঢেউ এগিয়ে আসছে কোনো প্রলয়ের মতো। আবহাওয়াবিদ ড. আবদুল্লাহ আল মিসনাদ জানিয়েছেন, এই ধূলিঝড়গুলো ২০০০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে এবং ঘণ্টায় ১০০ কিমি গতিতে ধাবিত হয়।
সরকারি কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান করতে, খোলা জায়গা এড়াতে এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, কুয়েতে তীব্র ধূলিঝড়ের কারণে বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর ও নৌবন্দর কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। ঘণ্টায় ১০০ কিমি বেগে ঝোড়ো বাতাসের কারণে ঘন ধুলোর সৃষ্টি হয়, ফলে অনেক এলাকায় দৃশ্যমানতা সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে যায়। মিশর থেকে আসা দুটি ফ্লাইটকে ঘুরিয়ে দিতে হয়েছে সৌদি আরবের দাম্মামে।
কুয়েত বন্দর কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় শুয়াইখ ও শুয়াইবা বন্দর বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এছাড়া, জর্ডানেও এই ধূলিঝড় এবং বজ্রঝড়ের কারণে সৃষ্ট বৃষ্টিপাত ব্যাপক বিপর্যয়ের কারণ হয়েছে। আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলগুলো। দেশটির অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র পেত্রা শহরের প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকায়ও বন্যার পানি ঢুকে পড়ে, ফলে শত শত পর্যটককে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।
মা'আনের কাছে একটি অ্যাডভেঞ্চার ট্যুর চলাকালে ওয়াদি আল নাখিলে বন্যায় ভেসে প্রাণ হারিয়েছেন এক বেলজিয়ান নারী ও তার সন্তান।
তিন দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরই ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। তারা জানিয়েছে, আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এবং আবহাওয়ার অস্থিরতা অব্যাহত থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা