আইনি জটিলতাগুলো বিবেচনায় নিয়ে ‘জুলাই জাতীয় সনদন্ড২০২৫’ বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। চলছে শেষ মুহূর্তের ভুলত্রুটি সংশোধনের কাজ। আজই তা চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে পাঠানো সম্ভব হবে বলে কমিশন আশা করছে।
ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও পদ্ধতি সম্পর্কিত সুপারিশ নিয়ে গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে কমিশন কার্যালয়ে বৈঠক করেন কমিশনের সদস্যরা। বৈঠকে
ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিশেষজ্ঞরা। বৈঠকে সনদ বাস্তবায়নসংক্রান্ত বিভিন্ন সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। যেখানে সাংবিধানিক ও আইনি দিকগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রাপ্ত মতামতও পর্যালোচনা করা হয়। সনদ বাস্তবায়নে যাতে কোনো আইনি জটিলতার সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়গুলো যাচাইবাছাই করা হয়।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. শরিফ ভূইয়া ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন। এ ছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠক শেষে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করা হয়েছে। এটা বাস্তবায়নে সরকারের দিক থেকে যেন সুনির্দিষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেই বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। সোমবার আবারও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসবে কমিশন। সুপারিশ সংবলিত প্রস্তাব আজকালের মধ্যে সরকারের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সুপারিশে একাধিক বিকল্প প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কমিশন সাংবিধানিক আদেশ ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ-২০২৫’ জারি ও এরপর গণভোটের প্রস্তাব করা হয়েছে। গণভোটে গৃহীত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে পরবর্তী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও ত্রয়োদশ সংসদ) দিয়ে সনদের সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করার সুপারিশ রাখা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধন প্রস্তাব পাসের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কারণ সংবিধান সংশোধনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বাধ্যতামূলক। তবে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় অর্থাৎ ১৫১ আসন পেলে প্রস্তাব অনুমোদন করতে পারবে, এমন সুপারিশের কথা আলোচনায় এসেছে। আজকের বৈঠকে এ বিষয়গুলো চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।