গাইবান্ধার সাঘাটায় যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু তোলার মহোৎসব চলছে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক্টর ও ট্রলি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে নদী থেকে তোলা বালু। বালুবাহী ভারী যানবাহন চলাচলে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। ধুলায় একাকার পুরো এলাকা। বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ। নদী হারাচ্ছে স্বাভাবিক গতিপথ। সরেজমিন দেখা যায়, সাঘাটা উপজেলার বেড়া এলাকায় যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বালু উত্তোলন চলছে। প্রতিদিন বালুবোঝাই ২৫টি ট্রাক্টর-ট্রলি বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। রাস্তায় ধুলো উড়ছে, ফেটে যাচ্ছে কাঁচা-পাকা পথ। পরিবেশবিদদের মতে, নির্বিচারে বালু তোলায় নদীর স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হয়। বেড়ে যাচ্ছে ভাঙন। বিলীন হচ্ছে কৃষিজমি। জীববৈচিত্রেও হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, নদীর বুকে চলছে বালু লুটপাট। বিভিন্ন পয়েন্টে কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বালু তুলে বিক্রি করছে বিভিন্ন প্রকল্পে। সাঘাটা উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে বালু তোলা বন্ধ করলেও কিছু দিন পর আবার শুরু হয় তোলার কাজ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ধারণক্ষমতার চেয়ে অধিক ভারী যানবাহন এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে গ্রামীণ রাস্তা থাকবে না। তারা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেছেন। এলাকার কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, রাস্তায় বালুবোঝাই গাড়ি চলে সারা দিন। এখন ফসল আনাও কষ্ট হয়। রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না, ভয় পায়। বেড়া এলাকার অটোরিকশাচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, বালুবোঝাই গাড়ি চলায় রাস্তাঘাটের অবস্থা বেহাল হয়ে গেছে। রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়। যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার ব্যাপারে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর মো. আল কামাহ্ তমাল বলেন, লোকেশনসহ বালু তোলায় জড়িতদের নাম-ঠিকানা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসন লোক পাঠানো হবে।