স্বাভাবিক হচ্ছে অশান্ত খাগড়াছড়ি। শহরে টমটম চলাচল করছে। সনাতনধর্মাবলম্বীরা দুর্গাপূজা পালন করতে মণ্ডপে যাচ্ছেন। শহরের শ্রীশ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির প্রাঙ্গণে পূজা ঘিরে মেলাও বসেছে। তবে চতুর্থ দিনের মতো ১৪৪ ধারা অব্যাহত আছে খাগড়াছড়ি জেলা সদর পৌরসভা ও গুইমারা উপজেলায়। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বিজিবি ও সেনাবাহিনী। অবশ্য দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করেনি।
পরিস্থিতি তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এতে সংশ্লিষ্ট দুই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি রয়েছেন। খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গুইমারা উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত রামসু বাজার পরিদর্শন করে আর্থিক ও ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। তিনি বলেন, ‘এখানে যা ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের পাশে থাকব।’ এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা।
এদিকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খাগড়াছড়ির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেন, ১৪৪ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। কেননা পাহাড় নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। কুচক্রী মহল নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে পাহাড়কে অশান্ত করতে চাইছে। জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে এখানে সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।
খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাদেমুল ইসলাম বলেন, এখানে যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না। আমরা যৌথ বাহিনী সম্মিলিতভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গুইমারার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আবুল কালাম শামসুদ্দিন (রানা) বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে পারি এটা কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এটা পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। পাহাড়ের শান্তি রক্ষায় আমরা কাজ করছি।’
সিন্দুকছড়ির জোন কমান্ডার লে. কর্নেল ইসমাইল সামস আজিজী বলেন, বিগত কয়েক দিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এটি স্পষ্ট যে ইউপিডিএফ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলো পার্বত্য চট্টগ্রাম অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সব জাতিগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী কাজ করে চলেছে।