জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে পুলিশের সাবেক আইজিপি (মহাপরিদর্শক) ও এ-সংক্রান্ত মামলার রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছর কারাদণ্ড হয়েছে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গতকাল এ রায় দেন। রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হয়ে মামলার অভিযোগ প্রমাণে ভূমিকা রাখার বিষয়টি সাবেক এ পুলিশপ্রধানের বিরুদ্ধে রায়ের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে রায়ে বলা হয়েছে, এ মামলার বিচারের ক্ষেত্রে তিনি অবদান রেখেছেন। এমনকি তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি ৩৬ দিনের আন্দালনের সব ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন। তার অবদান, স্বীকার করার সঙ্গে বস্তুগত সাক্ষ্যপ্রমাণ বিবেচনায় তার সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখানো হয়েছে। যেখানে অপরাধের সম্পৃক্ততায় সর্বোচ্চ শাস্তি। কিন্তু তাঁর অবদান বিবেচনায় নিয়ে আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন। ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে তিনিই প্রথম রাজসাক্ষী। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জবানবন্দিতে বলেছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরাসরি ‘লেথাল উইপন’ (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার ওই নির্দেশনা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে পেয়েছিলেন তিনি। মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত দুটি মামলা হয়েছে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আইজিপির দায়িত্ব পান। চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি তাঁর অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তাঁকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আইজিপি পদে রেখেছিল হাসিনার সরকার।