ব্যাপক সমালোচনার মুখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য জারি করা পোশাকবিধি সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ নির্দেশনা প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল দুপুরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
জানা যায়, গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের মাসিক সভায় পোশাক নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যেখানে নারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ওড়না এবং সাদামাটা হিজাব বা হেডস্কার্ফ পরিধানের কথা বলা হয়। একই সঙ্গে ছোট হাতা বা ছোট দৈর্ঘ্যরে পোশাক ও লেগিংস পরা নিষিদ্ধ করা হয়। নির্দেশনা পরিপালনের জন্য অফিস, বিভাগ, প্রকল্প, সেল, ইউনিটভিত্তিক পর্যবেক্ষণের জন্য একজন কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দিতে হবে। ওই নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তদারকি করবেন মনোনীত কর্মকর্তা। এর ব্যত্যয় হলে বিভাগীয় প্রধানকে অবহিত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নির্দেশনা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে অভিযোগ পাঠাবেন। এ নির্দেশনার খবর গত বুধবার গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা শুরু হয়। এ বিষয়ে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এইটা কী করেছে! তাদের কি আর কোনো কাজ নেই? কোন যুগে আছি আমরা?’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘একটি পেশাদার অফিসে কেউ অশালীন পোশাক পরে আসে না, তাহলে এমন নির্দেশনার প্রয়োজন কেন?’ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবাই যেন এক ধরনের মার্জিত পোশাক পরেন, সেটি নিশ্চিত করতেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।’ তবে তিনি নিজেই স্বীকার করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে আগে কেউ অশালীন পোশাক পরতেন না। গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এটি শুধু একটি বিভাগীয় আলোচনার অংশ ছিল। কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত বা অফিসিয়াল সার্কুলার নয়। বিদেশে অবস্থানরত গভর্নর আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমে বিষয়টি জেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তার নির্দেশেই তাৎক্ষণিকভাবে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অফিসে পেশাদার পোশাক পরার পরামর্শ দেওয়া হলেও সেটিকে বাধ্যতামূলক করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’