তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মাঝ আকাশে মৃত্যুর পর এক যাত্রীর মৃতদেহ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ফ্লাইট নম্বর টিকে৭৯ গত ১৩ জুলাই ইস্তাম্বুল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। প্রায় ১২ ঘণ্টার এই দীর্ঘ যাত্রাপথে গ্রিনল্যান্ডের আকাশে অবস্থানের সময়ে এক যাত্রী হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে, মাঝ আকাশেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে।
বিমানের গন্তব্য পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত না নিয়ে পাইলটেরা শিকাগোতে অবতরণ করেন। শিকাগো ও’হারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নত চিকিৎসা ও জরুরি ব্যবস্থাপনার সুযোগ থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে অ্যাভিয়েশন সূত্র।
তবে ঘটনার মোড় ঘুরে যায় বিমানটি অবতরণের পর। তুর্কি এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মৃতদেহটি বিমান থেকে নামিয়ে সান ফ্রান্সিসকো-গামী একটি ফ্লাইটে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে, সান ফ্রান্সিসকোর স্থানীয় মেডিকেল এক্সামিনারের অফিস জানিয়েছে, তারা কোনো মৃতদেহ গ্রহণ করেনি। একইসাথে শিকাগোর কুক কাউন্টি মেডিকেল অফিসেও এই মৃত্যুর কোনো রেকর্ড নেই।
এই অদ্ভুত ও রহস্যজনক ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে সেই মৃতদেহ কোথায় গেল? কিভাবে একজন মৃত্যুবরণকারী যাত্রীর দেহ একটি আন্তর্জাতিক বিমানে উঠানো, নামানো এবং পরবর্তী স্থানান্তর ছাড়াই ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায়?
উল্লেখযোগ্য যে, এই যাত্রীর এখনও কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ফ্লাইট টিকে৭৯-এর অন্য যাত্রীরা পরবর্তীতে একটি আলাদা ফ্লাইটে সান ফ্রান্সিসকোতে পৌঁছান।
এদিকে মিডিয়ার পক্ষ থেকে তুর্কি এয়ারলাইন্স, শিকাগো বিমানবন্দর এবং কুক কাউন্টি মেডিকেল এক্সামিনারের অফিসের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হলেও তারা এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
উল্লেখ্য, মাঝ আকাশে মৃত্যুর ঘটনা খুবই বিরল। প্রতি দশ লক্ষ যাত্রীর মধ্যে মাত্র ০.২১ জনের এমন পরিণতির শিকার হন।
এ বছরের মার্চ মাসেও অনুরূপ একটি ঘটনা ঘটে, যখন একটি ইজি-জেট ফ্লাইটে (টেনেরিফ থেকে লিভারপুল) এক নারী যাত্রীর মৃত্যু হয়, যাকে বাঁচাতে যাত্রীরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। এছাড়াও গত বছরের অক্টোবরে তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে পাইলটই হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন, যার ফলে নিউইয়র্কে জরুরি অবতরণ করতে হয়।
ফ্লাইট টিকে৭৯-এ মৃত্যুর ঘটনাটি যেমন দুঃখজনক, তেমনই মৃতদেহ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি বহু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা না দেয়, তবে এই ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরেকটি বড় কেলেঙ্কারিতে রূপ নিতে পারে।
সূত্র: মেট্রো
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল