বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-অভ্যুত্থানের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে পারেনি। গত এক বছরে গণ-অভ্যুত্থানের বৈষম্যবিরোধী চেতনার বিপরীতেই হেঁটেছে সরকার। ফলে বৈষম্য, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনৈতিক দল ও জনগণের অভূতপূর্ব সমর্থনে গঠিত সরকার বিস্ময়করভাবে নিজেদের দুর্বল ও অকার্যকর করে তুলছে। এ কারণে সাধারণ মানুষ আবারও হতাশায় নিমজ্জিত হতে শুরু করেছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ শহীদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত শহীদ স্মরণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শ্রমিক নেতা মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে তিনি আরো বলেন, ‘প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার অভাবে সরকার নিজেকে ব্যর্থ করে তুলছে। আর পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তিসহ অনেকেই এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে তৎপর রয়েছে। কেউ কেউ ঘর পোড়ার মধ্যে আলু পোড়া দিতে বসে আছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে দেশের নিরাপত্তা বিপজ্জনক মোড় নেবে এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণ কঠিন হবে। বিদ্যমান নৈরাজ্য ও মব সন্ত্রাস চলতে দিলে দেশ অচিরে বড় বিপর্যয়ে নিক্ষিপ্ত হবে। আর সরকার নিজের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে না পারলে জাতীয় নির্বাচনও বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।’
বিচার ও সংস্কারের পাশাপাশি আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশে পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে নারীদের বড় অংশগ্রহণ থাকলেও গণ-অভ্যুত্থান নারীর অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারেনি। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে নারী বিদ্বেষী তৎপরতায় নারীরা আরো বিপন্ন হয়েছে। নারীবিদ্বেষী সব তৎপরতা বন্ধের দাবি জানান তিনি।
রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ সবচেয়ে বেশি শহীদ হলেও তারাই এখনো সবচেয়ে বঞ্চিত ও নিপীড়নের শিকার। শ্রমিকদের অভুক্ত রেখে গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন করা যাবে না। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।’
রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আবু হাসান টিপু বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দল ও জনগণের বিপুল সমর্থনে ক্ষমতায় থাকলেও মানুষের কাছে তারা সবচেয়ে দুর্বল সরকার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই সুযোগে লুটপাটের পুরনো ধারা আবার ফিরে এসেছে।’ লুটপাট ও দখলদারি বন্ধের দাবি জানান তিনি।
সভায় গণ-অভ্যুত্থানের সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় মাইলস্টোন স্কুলে নিহত ও আহতদের পরিবারসমূহের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। এ ছাড়া আহতদের দ্রুত সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন