ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ফেনী সীমান্তে দুই বাংলাদেশি নিহত ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ওপারে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দুই যুবক। এ ছাড়া শেরপুর সীমান্ত দিয়ে ২১ জন রোহিঙ্গাকে ঠেলে পাঠিয়েছেন বাহিনীটির সদস্যরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
ফেনী : বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পরশুরাম উপজেলার বাঁশপদুয়া সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হন। এ সময় গুরুতর আহত হন আরও একজন। নিহত ব্যক্তিরা ওই এলাকার ইউছুফ মিয়ার ছেলে মিল্লাত হোসেন (২১) ও গাছি মিয়ার ছেলে মো. লিটন (৩২)। আহত যুবকের নাম মো. আফছার (৩১)। এর মধ্যে লিটনের লাশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিলোনিয়া হাসপাতালে রয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে গুথুমা বিওপির আওতাধীন ২১৬৪/৩এস পিলার পার হয়ে ভারতের অংশে যান মিল্লাত, লিটন ও আফছার। তখন তাদের লক্ষ্য করে বিএসএফ সদস্যরা গুলি ছোড়ে। এতে মিল্লাত ও লিটন আহত হন। মিল্লাতকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান। বিলোনিয়া হাসপাতালে লিটনের মৃত্যু হয়। বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, বাঁশপদুয়া সীমান্ত চোরাকারবারিপ্রবণ এলাকা। এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হবে এবং লিটনের লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ : বৃহস্পতিবার ভোরে শিবগঞ্জ উপজেলার সিংনগর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে তাদের স্বজনরা গুলিবিদ্ধের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে বিজিবি। গুলিবিদ্ধরা উপজেলার মুন্নাপাড়া তারাপুর এলাকার সুলতানের ছেলে সুমন (২৮) ও সাহাপাড়া মুন্সিপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম হানিফের ছেলে সেলিম (২৫)। স্থানীয় কয়েকজনের ভাষ্য, ভোরে শিংনগর সীমান্তের ১৬৪/৫-এর ১এস পিলার এলাকা দিয়ে গরু আনতে ভারতে যান সুমন ও সেলিম। দৌলতপুর ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে আহত হন তারা। দেশে ফিরে তারা গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ৫৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু জানান, আহত ব্যক্তিদের স্বজন ও ভারতের দৌলতপুর ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা গুলিবিদ্ধের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
শেরপুর : নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও সীমান্ত দিয়ে ১১ শিশুসহ ২১ জন রোহিঙ্গাকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বলে ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন ৩৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদি হাসান জানান। ওই ২১ জনকে আটক করে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। বিজিবি সূত্র জানায়, আটক ব্যক্তিরা ২০১৭ সালে কক্সবাজারের উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যান। এক মাস আগে দেশটির পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদি হাসান বলেন, আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে আরও যাচাইবাছাই এবং পরবর্তী কার্যক্রমের প্রক্রিয়া চলছে।