সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চিরুনি অভিযান শুরু হচ্ছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে এ অভিযান পরিচালনা হবে। গতকাল আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সরকার জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী যে কোনো কার্যক্রম কঠোর হাতে দমন করবে বলেও জানান তিনি। উপদেষ্টা বলেন, খুন, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মব সহিংসতা, মাদক চোরাচালানসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যে কোনো সময় চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে বিশেষ বা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে পারে। এক্ষেত্রে সাধারণ জনগণসহ সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আজ (রবিবার) থেকেই শুরু হতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ চিরুনি অভিযান সম্পর্কে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলেছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা ও নির্বাচনপূর্ব স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পুলিশ সারা দেশে কাজ করছে। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় দেশের প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। নিজ নিজ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশকে সদা প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদেরও সজাগ থাকতে বলা হয়। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
গতকালের সভায় মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা, মাদকের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন পরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনসমূহের অপতৎপরতা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। সভায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জুলাই হত্যাকাণ্ডের শহীদদের মামলার রেকর্ড, তদন্ত ও অগ্রগতি, সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি; রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।