২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে খেলনা সামগ্রী রফতানির পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থ-বছরে ৮৮টি দেশে রফতানি হয় ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সারা বিশ্বে খেলনার বাজার ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার অভাব, কাঁচামাল আমদানিতে উচ্চ শুল্ক হার, বন্ডেড সুবিধার অনুপস্থিতি, অপ্রতুল অবকাঠামো, টেস্টিং সুবিধার অপর্যাপ্ততা কারণে এ খাত পিছিয়ে আছে। সহায়ক নীতিমালা পেলে এ খাত বৈশ্বিক বাজারে রফতানিতে বড় ভূমিকা রাখবে।
আজ ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত “রফতানি বহুমুখীকরণ; খেলনা উৎপাদন শিল্পে উদ্ভাবন এবং রফতানির সম্ভাবনা” শীর্ষক ফোকাস গ্রুপ আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
এসময় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সদস্য (কাস্টমস: নীতি ও আইটি) মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর এবং বাংলাদেশস্থ বৃটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্টিন ডওসন, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণের বিষয়টি বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিগত বছরগুলোতে আমাদের রফতানি গুটিকয়েক পণ্যের উপর অধিকমাত্রায় নির্ভরশীল ছিলাম। খেলনা সামগ্রী রফতানির বৈশ্বিক বাজার ১০২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যেটি ২০২৩০ সালে ১৫০ বিলিয়নে পৌঁছাবে, সেখানে এখাতে আমাদের রফতানি মাত্র ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের অনুপস্থিতি, টেস্টিং সুবিধার অপ্রতুলতা, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকারের সীমাবদ্ধতা, ব্যবহৃত কার্চামালে আমদানি নির্ভরতা ও আমদানি পণ্যের উপর উচ্চ শুল্কারোপ, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং সহায়ক নীতিমালার অভাবে এখাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না, বলে জানান তিনি।
এনবিআরের সদস্য মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে তৈরি পোষাকের পাশাপাশি সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাতের উপর নজর দিতে হবে, এলক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংশ্লিষ্ট নীতিমালা সহজীকরণ ও বন্ডেড সুবিধা প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে। গত ৪০ বছর ধরে তৈরি পোষাকখাতে সহায়তা দেওয়া হলেও এখাতের সক্ষমতা কতটুকু বেড়েছে তা নিয়ে চিন্তার সময় এসেছে, তাই খেলনা শিল্পের উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্রাপ্তির চাইতে নিজেদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানো এবং পণ্যের উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বেশি হারে মনোযোগী হতে হবে।
বৃটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্টিন ডওসন বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত খেলনা পণ্য রফতানির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে এবং বৃটিশ সরকার এখাতে সহযোগিতা করতে বেশ আগ্রহী। বিদ্যমান নীতিমালার সংষ্কার ও প্রতিবন্ধকতা নিরসন করা সম্ভব হলে বৃটেনে এখাতের পণ্যের রফতানি আরও বহুগুণ বাড়বে।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং জালালাবাদ পলিমারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, প্লাস্টিক খাতে বাংলাদেশে প্রায় ৫ হাজারের মত প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে ২৫০টি খেলনা সামগ্রী উৎপাদনের সাথে জড়িত এবং এখাতে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ কর্মরত রয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে খেলান সামগ্রী রফতানির পরিমাণ ছিল ১৫.২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮৮টি দেশে রফতানির মাধ্যমে তা ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তিনি পণ্যের মান নিশ্চিতকরণ, অপ্রতুল অবকাঠমো, গবেষণা কার্যক্রমের অনুপস্থিতি এবং নতুন পণ্যের ডিজাইন উদ্ভাবনে পিছিয়ে থাকা প্রভৃতি বিষয়সমূহের কারণে এখাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে জানান।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত